ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কার্জন হলে ক্যাফেটেরিয়া, ফার্মেসি/ভ্যান্ডিং মেশিনসহ মোকাররম ভবনে ক্যান্টিন স্থাপনের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী।
মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলের সামনে দোয়েল চত্বরে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে এ মানববন্ধন করা হয়। এসময় শিক্ষার্থীরা তিনটি দাবি উত্থাপন করেন।
শিক্ষার্থীরা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে কার্জন হল এলাকা ও মোকাররম ভবনে ক্যাফেটেরিয়া ও ক্যান্টিন স্থাপনের দাবি তোলা হচ্ছে। নারী শিক্ষার্থীদের জরুরি সেবার জন্য ফার্মেসি চাওয়া হয়েছে কিন্তু প্রশাসন নির্বিকার। কার্জন হলে জহিরের ক্যান্টিন থাকা সত্ত্বেও সেখানে মানসম্মত ও পর্যাপ্ত খাবার থাকেনা এবং বসার কোনো পরিবেশ নেই। ফলে কার্জন হলের খাদ্য ব্যবস্থাপনা সংকট এবং শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি নিরসনে একটি ক্যাফেটেরিয়া স্থাপন অনিবার্য। এছাড়া অত্র এলাকায় নারী শিক্ষার্থীদের জরুরি প্রয়োজনে ফার্মেসি সেবার দরকার হয়। জনস্বাস্থ্যের বিষয়টি বিবেচনা নিয়ে অত্র এলাকায় ফার্মেসি/ভ্যান্ডিং মেশিন স্থাপন করলে শিক্ষার্থীরা উপকৃত হবেন।
গণিত বিভাগের ২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ সালেহীন অয়ন বলেন, আমাদের ঢাবির কার্জন-মোকাররম এলাকায় ছাত্র-ছাত্রীদের সংখ্যা প্রায় ১২-১৪ হাজারের মতো। অথচ আমাদের এখানে খাবার খাওয়ার জন্য শুধুমাত্র ম্যাথ ক্যান্টিন, সায়েন্স লাইব্রেরির পিছনের খাবারের দোকান, জহিরের ক্যান্টিন এবং আইএনএফএস-এর খাবারের দোকান বাদে আর কোথাও খাবারের ব্যবস্থা নেই। অনেক সময় আমাদের দাঁড়িয়ে খেতে হয়। বৃষ্টির দিনে দাঁড়ানোর মতো পরিবেশও থাকে না।
তিনি আরও বলেন, জহিরের ক্যান্টিনে জায়গার খুবই স্বল্পতা। ভিতরে কয়েকজনমাত্র বসতে পারেন, আর বাকি সবার বাইরে দাঁড়িয়ে খাওয়া-দাওয়া করতে হয়। অনেক সময় প্রস্রাবের দুর্গন্ধে দাঁড়ানোই যায় না। আইএনএফএস-এর ক্যান্টিনেও একই অবস্থা, বসার জায়গা খুব কম। ম্যাথ ক্যান্টিনে বসার মতো জায়গা থাকা সত্ত্বেও লাঞ্চ টাইমে এত ভিড়ের মধ্যেও সবার অনেক কষ্ট করতে হয়। মাঝে মাঝে ক্লাসের প্রেশার থাকার কারণে না খেয়েই আমাদের চলে যেতে হয়। তাই আমরা চাই- কার্জন হলে ক্যাফেটেরিয়া স্থাপন ও মোকাররম ভবনে ক্যান্টিন স্থাপন করা হোক।
আরেক শিক্ষার্থী মীম জামান বলেন, আমাদের কার্জন এলাকার মোট শিক্ষার্থীর প্রায় অর্ধেক নারী। এখানে কোনো ফার্মেসি নেই। ফলে, জরুরি প্রয়োজনে আমাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফার্মেসিতে যেতে বলা হয়। এ অবস্থায় আমাদের ৩০-৪০ টাকা রিকশা ভাড়া দিয়ে এত দূরে যেতে হয়। আমরা আমাদের পর্যাপ্ত মেডিসিন সেবা পাই না। দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠে আমাদের অন্য কোথাও গিয়ে প্রয়োজনীয় ওষুধ সংগ্রহ করতে হয়। তাই আমরা মনে করি- কার্জন এলাকায় ফার্মেসি অথবা ডিজিটাল ভ্যান্ডিং মেশিন স্থাপন করা জরুরি।
তাদের দাবিগুলো হলো
১. কার্জন হলে ক্যাফেটেরিয়া স্থাপন করতে হবে।
২. মোকররম ভবনে ক্যান্টিন স্থাপন করতে হবে।
৩. কার্জন হল এলাকায় ফার্মেসি/ভ্যান্ডিং মেশিন স্থাপন করতে হবে।
এসময় মানববন্ধনের বিভিন্ন বিভাগের প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন। এর আগে, কার্জন হলে ক্যাফেটেরিয়া, ফার্মেসি/ভ্যান্ডিং মেশিন এবং মোকাররম ভবনে ক্যান্টিন স্থাপনের দাবিতে লিফলেট বিতরণসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারণা চালান সাইন্সের শিক্ষার্থীরা।
