শিক্ষকদের কর্মবিরতিতে অচল ঢাকা কলেজ, বন্ধ ক্লাস-পরীক্ষা


Desk report | Published: 2023-10-10 16:10:09 BdST | Updated: 2024-05-18 11:56:25 BdST

ক্যাডার বৈষম্য, পদোন্নতিজট, চাহিদা অনুসারে পদ সৃষ্টি না করাসহ নানান অভিযোগ ও দীর্ঘদিনের বিভিন্ন অসন্তোষের সমাধানের দাবিতে সারাদেশে চলছে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির তিন দিনের সর্বাত্মক কর্মবিরতি। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) সকাল থেকে সারাদেশে একযোগে এই কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। আগামী ১১ ও ১২ অক্টোবরও এই কর্মবিরতি চলবে। সমিতির নির্দেশনা অনুযায়ী রাজধানীর ঢাকা কলেজেও সকাল থেকে শিক্ষকরা কর্মবিরতি পালন করছেন। এতে করে বন্ধ রয়েছে সব ধরনের শ্রেণি শিক্ষা কার্যক্রম।

জানা গেছে, বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির ঘোষণা অনুযায়ী, দেশের সব সরকারি কলেজ, সরকারি আলীয়া মাদ্রাসা, সরকারি টিটি কলেজ, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর, মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর, পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর, সকল শিক্ষা বোর্ড, এনসিটিবি, নায়েম, ব্যানবেইসসহ শিক্ষা সংশ্লিষ্ট সব দপ্তর ও অধিদপ্তরে কর্মরত শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তারা সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করছেন। ক্লাস, অভ্যন্তরীণ পরীক্ষা, শিক্ষা বোর্ড ও বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের অধীন ভর্তি, ফরম পূরণ, সব ধরনের পরীক্ষা, প্রশিক্ষণ কর্মশালা, এবং দাপ্তরিক সকল কর্মকাণ্ড, কর্মবিরতির আওতায় রয়েছে।

দুপুরে সরেজমিনে ঢাকা কলেজ ঘুরে দেখা যায়, টিচার্স লাউঞ্জে জড়ো হয়ে শিক্ষকরা প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করছেন। অধিকাংশ বিভাগের শ্রেণিকক্ষগুলোই ফাঁকা। যে কয়েকজন শিক্ষার্থীরা আসছেন তারাও ঘুরে যাচ্ছেন। বন্ধ রয়েছে সব ধরনের দাপ্তরিক কার্যক্রম। বিভাগগুলোতেও চলছে না কোনো কার্যক্রম।

ঢাকা কলেজ শিক্ষক পরিষদ সম্পাদক ড. মো. আব্দুল কুদ্দুস শিকদার বলেন, শিক্ষা ক্যাডারের স্বার্থে নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষায় বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি ঘোষিত সকল কর্মসূচির সফল বাস্তবায়নে আমরা বদ্ধপরিকর। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ও মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা নিয়োগবিধি বাতিল, শিক্ষা ক্যাডার তফসিলভুক্ত পদ থেকে শিক্ষা ক্যাডার বহির্ভূতদের প্রত্যাহার করতে হবে। জেলা উপজেলায় শিক্ষা ক্যাডার নিয়ন্ত্রিত শিক্ষা প্রশাসন সৃষ্টি ও প্রয়োজনীয় পদসৃজন করতে হবে। তাছাড়া চাকরীর ৫ বছর পূর্তিতে ষষ্ঠ গ্রেড প্রদানসহ বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের ন্যায্য দাবি গুলো দ্রুত মেনে নেওয়ার দাবিও জানান তিনি।

বিসিএস শিক্ষা সমিতির ঢাকা কলেজ ইউনিটের সম্পাদক ড. মো. দিললুর রহমান বলেন, বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচি আমরা পালন করছি। শিক্ষা ক্যাডারের বৈষম্য অবিলম্বে দূর করতে হবে। আমরা চাই সংবিধানের নিয়ম অনুযায়ী সকল ক্যাডারের কর্মকর্তাদের জন্য সমান সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করা হোক। আমরা কর্মস্থলে উপস্থিত থেকে পাঠদান, পরীক্ষা গ্রহণ, সভায় অংশগ্রহণ ও দাপ্তরিক কাজ হতে বিরত আছি।

অপরদিকে শিক্ষা ক্যাডারের সংকট নিরসনের জন্য দ্রুততম সময়ের মধ্যে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার উদ্যোগ না নিলে আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে বলে জানান বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির মহাসচিব মো. শওকত হোসেন মোল্যা। তিনি বলেন, মন্ত্রণালয়ের সদিচ্ছা থাকলেই সব সমস্যার সমাধান করে ফেলা সম্ভব। আমাদের যতগুলো দাবি আছে কোন কিছুই অযৌক্তিক নয়। সবগুলোই সম্পূর্ণ বিধি মোতাবেক। যে সমস্যাগুলো তৈরি হয়েছে সেগুলো সমাধান করার জন্য আমরা বলছি। এখানে অন্য কোনো বিষয় নেই। মন্ত্রণালয় চাইলেই খুব সহজেই এই সমস্যার সমাধান করতে পারে।