সেদিন গণতন্ত্র মুক্তির মশাল নিয়ে ফিরে এলেন বঙ্গকন্যা


ফুয়াদ হোসেন | Published: 2023-06-11 15:28:50 BdST | Updated: 2024-04-29 13:54:05 BdST

আজ ঐতিহাসিক ১১ই জুন, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সভাপতি এবং গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার ১৫তম কারামুক্তি দিবস।

সেনা শাসিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় জনৈক ব্যবসায়ী আজম জে চৌধুরীর দায়েরকৃত মিথ্যা এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে প্রণেদিত চাদাঁবাজীর মামলায় প্রায় দীর্ঘ এগারো মাস কারাভোগ করেন জননেত্রী শেখ হাসিনা। অতঃপর ২০০৮ সালের ১১ই জুন জাতীয় সংসদ ভবন চত্বরে স্থাপিত বিশেষ কারাগার থেকে মুক্তি পান দেশরত্ন শেখ হাসিনা।

১/১১-এর প্রেক্ষাপটের সময় তৎকালীন সেনাপ্রধান মঈন-ইউ আহাম্মেদ এবং ফখরুদ্দিন আহাম্মেদের নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ২০০৭ সালের ১৬ই জুলাই গ্রেফতার হন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী, আওয়ামীলীগ সভাপতি জননেত্রী শেখ হাসিনা।

কারাভোগকালীন সময়ে কারাগারের অভ্যন্তরে জননেত্রী শেখ হাসিনা অসুস্থ হয়ে পড়েন। এমন অবস্থায় বিদেশে চিকিৎসার জন্য তাকে মুক্তি দেয়ার দাবি ওঠে বিভিন্ন মহল থেকে। আওয়ামী লীগ; ছাত্রলীগ এবং আওয়ামী লীগের অন্যান্য অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের ক্রমাগত চাপ, আপোষহীন মনোভাব ও জনতার অনড় দাবির পরিপ্রেক্ষিতে তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার শেখ হাসিনাকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়।

গণতন্ত্রের মুক্তি এবং ভোটের অধিকার রক্ষায় দল নিরপেক্ষ ব্যক্তিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান নিযুক্ত করার দাবিতে ২০০৬ সালে রাজপথে নামে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট। কিন্তু জনদাবি মানতে নারাজ বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার।

রাজনৈতিক দলগুলির চরম আপত্তি সত্বেও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হলেন জোট সরকারের রাষ্ট্রপতি ইয়াজ উদ্দিন আহাম্মেদ। এই প্রেক্ষাপটে উত্তাল হয় আন্দোলন, রাজধানী ঢাকা সহ সমগ্র দেশে। ইয়াজউদ্দিনের পদত্যাগ জনদাবিতে পরিনত হয়, এই প্রেক্ষিতে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন ইয়াজউদ্দিন। সেই সাথে জাড়ি হয় দেশ জুড়ে জরুরী অবস্থা; দৃশ্যপটে ১/১১ সরকার। সামনে ফখরুদ্দিন, নেপথ্যে তৎকালীন সেনাপ্রধান মঈনউদ্দিন আহাম্মেদ! গনতান্ত্রিক ধারা ব্যহত করে সেই সরকার গঠনের সকল আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্য হয়েছিল বঙ্গভবনে।

মাইনাস টু ফর্মূলার অংশ হিসেবে গ্রেপ্তার করা হয় জননেত্রী শেখ হাসিনাকে। তৎকালীন সেনা শাসিত সরকার জনরোষ এড়াতে কারাগারে না রেখে জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায় স্থাপিত বিশেষ কারাগারে রাখে আওয়ামীলীগ সভাপতি জননেত্রী শেখ হাসিনাকে।

বঙ্গবন্ধু কন্যার আপোষহীন মনোভাব, মানসিক দৃঢ়তা এবং জনদাবি জননেত্রী শেখ হাসিনার মুক্তির পথকে সুপ্রসন্ন করে; দেশরত্নের রাজনৈতিক প্রজ্ঞায় পরাস্থ হয় তখনকার তত্ত্বাবধায়ক সরকার।

বহু ত্যাগ আন্দোলন এবং সংগ্রামের পর ২০০৯ সালের অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জনরায় আসে আওয়ামী লীগের পক্ষে। মহান মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী আওয়ামীলীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গঠন করে; বাংলাদেশে মুক্তি পায় গনতন্ত্র।

সংগ্রামী ইতিহাসের এই দিনে দেশরত্নের দীর্ঘয়ু এবং সুস্বাস্থ্য কামনা করছি, একই সাথে কৃতজ্ঞচিত্তে স্বরণ করছি ১/১১ এর সেই কঠিন সময়টাতে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের ত্রানকর্তা হিসেবে হালধরা দুই নৌকার মাঝি, জননেত্রী শেখ হাসিনার বিশ্বস্ত সহচর; বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের দুই সাবেক সফল সাধারণ সম্পাদক (প্রয়াত) জননেতা জিল্লুর রহমান এবং সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকে; যাদের সেই সংগ্রামী দিনগুলির দূরদর্শী এবং সাহসী রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত দেশরত্নের মুক্তির পথকে তরান্বিত করেছিলো।

জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু; জননেত্রী শেখ হাসিনার চলার পথ মসৃণ থাকুক।

লেখক: ফুয়াদ হাসান, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা