'৭টি ধ্বংসাত্মক কাজ থেকে তোমরা দূরে থাকবে'


টাইমস অনলাইনঃ | Published: 2017-08-12 05:22:45 BdST | Updated: 2024-05-16 17:09:03 BdST

কুরআন ও হাদীসে কাবীরা গুনাহের পূর্ণ সংখ্যার বর্ণনা এক সাথে উল্লেখ নেই। তবে কুরআনে ও হাদীসে যে সকল গুনাহকে কাবীরা গুনাহের অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে, উলামায়ি কিরাম এর সংখ্যা ৭০টি বলে বর্ণনা করেছেন। আবার তাঁদের কেউ কেউ তার সংখ্যা এর চেয়ে অধিক বলেও উল্লেখ করেছেন। এসকল কাবীরা গুনাহের মধ্যে কোনটি কোনটির চেয়ে অপেক্ষাকৃত অধিক গুরুতর।

কবীরা গুনাহ বলা হয় ঐ সকল বড় বড় পাপকর্ম সমূহকে যেগুলোতে নিন্মোক্ত কোন একটি বিষয় পাওয়া যাবে:

যে সকল গুনাহের ব্যাপারে ইসলামে শরীয়তে জাহান্নামের শাস্তির কথা বলা হয়েছে।
যে সকল গুনাহের ব্যাপারে দুনিয়াতে নির্ধারিত দণ্ড প্রয়োগের কথা রয়েছে।
যে সকল কাজে আল্লাহ তায়ালা রাগ করেন।
যে সকল কাজে আল্লাহ তায়ালা, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও ফেরেশতা মণ্ডলী লানত দেন।
যে কাজের ব্যাপারে বলা হয়েছে, যে এমনটি করবে সে মুসলমানদের দলভুক্ত নয়।
কিংবা যে কাজের ব্যাপারে আল্লাহ ও রাসূলের সাথে সম্পর্কহীনতার ঘোষণা দেয়া হয়েছে।
যে কাজে দ্বীন নাই, ঈমান নাই ইত্যাদি বলা হয়েছে।
যে ব্যাপারে বলা হয়েছে এটি মুনাফিকের আলামত বা মুনাফিকের কাজ।
যে কাজকে আল্লাহ তায়ালা সাথে যুদ্ধ ঘোষণা করা হয় করা বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
কবীরা গুনাহ থেকে বিরত থাকার মর্যাদা

১. মহান আল্লাহ বলেন:

إِن تَجْتَنِبُوا كَبَائِرَ مَا تُنْهَوْنَ عَنْهُ نُكَفِّرْ عَنكُمْ سَيِّئَاتِكُمْ وَنُدْخِلْكُم مُّدْخَلًا كَرِيمًا

“যেগুলো সম্পর্কে তোমাদের নিষেধ করা হয়েছে যদি তোমরা সেসব বড় গোনাহ গুলো থেকে বেঁচে থাকতে পার। তবে আমি তোমাদের (ছাট) গুনাহ সমূহ ক্ষমা করে দেব এবং সম্মান জনক স্থানে তোমাদের প্রবেশ করাব।” (সূরা নিসা: ৩১)

২. রাসুলুল্লাহ সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন:

الصلوات الخمس . والجمعة إلى الجمعة . ورمضان إلى رمضان . مكفرات ما بينهن إذا اجتنب الكبائر

“পাঁচ ওয়াক্ত নামায, এক জুমআ থেকে আরেক জুমআ এবং এক রামাযান থেকে আরেক রামাযান এতদুভয়ের মাঝে সংঘটিত সমস্ত পাপরাশীর জন্য কাফফারা স্বরূপ যায় যদি কবীরা গুনাহ সমূহ থেকে বেঁচে থাকা যায়।” (মুসলিম)

قَالَ عَبْدُ اللَّهِ: قَالَ رَجُلٌ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، أَيُّ الذَّنْبِ أَكْبَرُ عِنْدَ اللَّهِ؟ قَالَ: «أَنْ تَدْعُوَ لِلَّهِ نِدًّا وَهُوَ خَلَقَكَ» قَالَ: ثُمَّ أَيٌّ؟ قَالَ: «ثُمَّ أَنْ تَقْتُلَ وَلَدَكَ خَشْيَةَ أَنْ يَطْعَمَ مَعَكَ» قَالَ: ثُمَّ أَيٌّ؟ قَالَ: «ثُمَّ أَنْ تُزَانِيَ بِحَلِيلَةِ جَارِكَ» فَأَنْزَلَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ تَصْدِيقَهَا: {وَالَّذِينَ لاَ يَدْعُونَ مَعَ اللَّهِ إِلَهًا آخَرَ وَلاَ يَقْتُلُونَ النَّفْسَ الَّتِي حَرَّمَ اللَّهُ إِلَّا بِالحَقِّ وَلاَ يَزْنُونَ وَمَنْ يَفْعَلْ ذَلِكَ يَلْقَ أَثَامًا} [الفرقان: 68] الآيَةَ

আব্দুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) বলেনঃ এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (সঃ)- কে জিজ্ঞেসা করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আল্লাহ তা’আলার নিকট সবচেয়ে বড় গুনাহ কোনটি? উত্তরে রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেন, তোমার সন্তান তোমার সাথে খাবে এ ভয়ে তাকে হত্যা করা। তিনি আবার প্রশ্ন করলেন, তারপর কোনটি? রাসূলুল্লাহ (সঃ) জবাব দিলেন, প্রতিবেশীর স্ত্রীর সাথে ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়া।[বুখারি ৬৮৬১]

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «اجْتَنِبُوا السَّبْعَ المُوبِقَاتِ» ، قَالُوا: يَا رَسُولَ اللَّهِ وَمَا هُنَّ؟ قَالَ: «الشِّرْكُ بِاللَّهِ، وَالسِّحْرُ، وَقَتْلُ النَّفْسِ الَّتِي حَرَّمَ اللَّهُ إِلَّا بِالحَقِّ، وَأَكْلُ الرِّبَا، وَأَكْلُ مَالِ اليَتِيمِ، وَالتَّوَلِّي يَوْمَ الزَّحْفِ، وَقَذْفُ المُحْصَنَاتِ المُؤْمِنَاتِ الغَافِلاَتِ»

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ ৭টি ধ্বংসাত্মক কাজ থেকে তোমরা দূরে থাকবে। সাহাবীগণ জিজ্ঞেসা করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! সে ৭টি কাজ কি কি?

তিনি বললেনঃ (১) আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করা; (২) যাদু করা; (৩) শারী’আতের বিধান ছাড়া কোন ব্যক্তিকে হত্যা করা, যা আল্লাহ হারাম করেছেন; (৪) ইয়াতীমের মাল ভক্ষণ করা; (৫) সুদ খাওয়া; (৬) জিহাদের ময়দান থেকে পালায়ন করা; (৭) নিরাপরাধ ও পবিত্র মুসলিম মহিলাদের নামে যিনার অপবাদ রটানো। (বুখারী ২৬৬৬, মুসলিম হাঃ ১৪৫ )

এমএসএল