ফাঁস হওয়া ফোনালাপ সুপার এডিট: ভিকারুননিসা প্রিন্সিপাল


টাইমস ডেস্ক | Published: 2021-07-27 00:46:17 BdST | Updated: 2024-03-19 13:04:31 BdST

ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রিন্সিপাল কামরুন নাহার ও অভিভাভবক ফোরামের নেতা মীর সাহাবুদ্দিন টিপুর মধ্যকার ফাঁস হওয়া ফোনালাপ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা আলোচনা সমালোচনা হচ্ছে।

এতে দেখা যায় প্রিন্সিপাল এক পর্যায়ে বলেন, ‘আমি বালিশের নিচে পিস্তল রাখি। কোনো ... বাচ্চা যদি আমার পেছনে লাগে আমি কিন্তু ওর পেছনে লাগব, আমি শুধু ভিকারুননিসা না আমি তাকে দেশছাড়া করব। ’

ফাঁস হওয়া ওই ফোনালাপ ভিত্তিহীন ও সুপার এডিট করা বলে মন্তব্য করেছেন কলেজের প্রিন্সিপাল কামরুন নাহার।

৪ মিনিট ৩৯ সেকেন্ড ধরে অধ্যক্ষ ও ভিএনএসসির অভিভাবক ফোরামের নেতা মীর সাহাবুদ্দিন টিপুর মধ্যে চলা ওই কথোপকথন এখন টক অব দ্যা টাউন। সেই অডিও ফোনালাপে এমনকিছু গালাগালি রয়েছে যা ছাপার অযোগ্য।

ফাঁস হওয়া এই অডিও কথোপকথনকে ভিএনএসসির দীর্ঘদিনের সুনাম ও ঐতিহ্যের ওপর আঘাত বলে মন্তব্য করেছেন গভর্নিং বোর্ডের সদস্যরা। তারা বলেন, এই অধ্যক্ষ এ বছরের প্রথম দিন যোগদান করেন। এরপর থেকেই তিনি প্রতিষ্ঠানে আসেননি বললেই চলে। কেউ যদি তাকে প্রতিষ্ঠানে আসার বিষয়ে অনুরোধ করেন, তিনি (কামরুন নাহার) সবাইকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। তিনি শুধু শিক্ষক নন, বড় রাজনীতিক এবং ছাত্রলীগ, যুবলীগ, মন্ত্রী, সচিবালয় এবং সরকারের শীর্ষপর্যায় পর্যন্ত তার পক্ষে আছে বলেও দাবি করেন।

অভিভাবক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মো. আবদুল মজিদ সুজন অধ্যক্ষের অপসারণ দাবি করে বলেন, কামরুন নাহার যোগদানের পর থেকে কলেজের বাসভবনে থাকলেও তিনি কখনো নিজ অফিসে বসেন না। অভিভাবকরা বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চাইলেও কারও সঙ্গে তিনি দেখা করেন না। ভিকারুননিসার যেসব শিক্ষার্থীর অভিভাবক মারা গেছেন তাদের বিনা বেতনে পড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হলেও সে বিষয়ে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেননি অধ্যক্ষ। সভাপতি হিসেবে ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার স্কুলের জন্য সময় দিতে পারেন না বলে অধ্যক্ষ বেপরোয়া হয়ে অনিয়ম করে যাচ্ছেন।

সার্বিক বিষয়ে প্রিন্সিপাল কামরুন নাহার বলেন, আমি ক্যাম্পাসে আসার তিন দিনের মাথায় ওরা আমাকে গালিগালাজ শুরু করে। ওদের কথামত নাকি আমাকে চলতে হবে। এর আগের প্রিন্সিপালকে তারা মোবাইল ছুঁড়ে মেরেছে। আমার বাসায় ঢিল মারে। আমার দরজায় লাথি মারছে। লাথি মেরে আমার চেয়ার ফেলে দিয়েছে।

তিনি বলেন, ওরা চায় (অভিভাবক ফোরাম) আমি কিছু আসন ফাঁকা রাখি যাতে তারা ভর্তি বাণিজ্য করতে পারে। আমি বলেছি শিক্ষামন্ত্রী আমাকে এখানে থাকতে বলেছেন। এ প্রতিষ্ঠানকে ঠিক করার দায়িত্ব আমাকে দিয়েছেন। আমি যদি এদের কথায় ভর্তি বাণিজ্যের অনিয়ম করে বেড়াই মন্ত্রীর কাছে আমি তখন কি জবাব দেবো। আমার ইতিহাসে অন্যায়ের কোন দাগ নেই। এর আগের কোন প্রিন্সিপাল এখানে কেন থাকতে পারেনি এখন বুঝতে পেরেছি।

তিনি বলছিলেন, এবারের ভর্তির লটারির সময়ও তারা ১২০ সিট খালি রেখেছে। এছাড়া কিছু শিক্ষার্থী ভর্তি হয়নি। সবমিলিয়ে প্রায় ১৫০-৬০ সিট খালি আছে। মূলত সেগুলোতে অবৈধ ভর্তি করতে তারা আমাকে অনেক আগে থেকে চাপ দিচ্ছে। আমি তাদের কথা না শোনায় যত কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে।

মূলত ভর্তি বাণিজ্য নিয়ে পেরে না উঠে আমাকে ফাঁসানোর জন্য এ ষড়যন্ত্র করছেন জিবি সদস্য ও অভিভাভবক ফোরামের লোকজন। আমি এ প্রতিষ্ঠান বাঁচাতে চাই। এক্ষেত্রে সবার সহযোগিতা চাই। প্রতিষ্ঠানটিকে ধ্বংস করতে এটি তাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা। আমি প্রতিষ্ঠানটিকে বাঁচাতে চাই। আপনারা সবাই এগিয়ে আসুন।

তিনি বলেন, তারা অনেকগুলো গ্রুপ ছিল। এখন ভর্তি বাণিজ্য করতে সবাই আমার বিরুদ্ধে এক হয়েছে। আমি এ প্রতিষ্ঠানে থাকতে চাই। যারা অন্যায় করবে তাদের বিরুদ্ধে আপনাদের সবাইকে নিয়ে লড়তে চাই। কোন অনিয়মকে কখনো প্রশ্রয় দিইনি দেবোও না।

//