নাইকো মামলা অতীত ও ভবিষ্যত নিয়ে ডাকসুর প্রথম ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত


ঢাবি টাইমস | Published: 2020-05-17 21:34:27 BdST | Updated: 2024-05-17 08:52:40 BdST

স্বদিচ্ছা থাকলে প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি বন্ধ করা সম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন মাননীয় বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সুশাসনের প্রতি রাজনৈতিক অঙ্গীকার ও দায়বদ্ধতা থাকলে প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি বন্ধ করা সম্ভব। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার তা আবার প্রমাণ করলো। তার সরকারের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বাংলাদেশের ইতিবাচক ভাবমূর্তি বহির্বিশ্বে উজ্জ্বল থেকে উজ্জ্বলতর করেছে।’

শনিবার (১৬ মে) রাতে তার বাসভবন থেকে অনলাইনে ডাকসু ল’ অ্যান্ড পলিটিক্স রিভিউ কর্তৃক আয়োজিত ‘নাইকো আর্বিট্রেশন ২০২০- রাজনৈতিক ও বিচারিক ইতিহাস এবং ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক সেমিনারে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

নসরুল হামিদ বলেন, ‘সরকারের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ বিরোধ নিষ্পত্তি সংক্রান্ত সালিশি আদালতে (ইকসিড) প্রমাণ করা গেছে যে, ছাতক গ্যাসক্ষেত্র বিস্ফোরণের জন্য নাইকোই দায়ী।’ প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত সরকারের আমলে গ্যাস ফিল্ড ও বাংলাদেশের অর্থনীতির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ২০০৫ সাল থেকে যদি দৈনিক ৫০০ মিলিয়ন ঘন ফুট গ্যাস পেতাম তবে তা আমাদের অর্থনীতিতে বিশাল অবদান রাখতে পারতো।’

ডাকসুর আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক শাহরিমা তানজিন অর্নি এবং ডাকসু ল অ্যান্ড পলিটিক্স রিভিউ’এর প্রধান সম্পাদক মোঃ আজহার উদ্দিন ভূঁইয়ার সঞ্চালনায় এই আয়োজনে বক্তব্য রাখেন নাইকো আর্বিট্রেশন মামলায় বাংলাদেশ পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার মঈন গণি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. রুমানা ইসলাম।

২০০৩ সালে নাইকো-বাপেক্স যৌথ উদ্যোগে একটি চুক্তির মাধ্যমে ছাতক গ্যাসক্ষেত্রটি উন্নয়নের দায়িত্ব পায় নাইকো। ২০০৫ সালে ৭ জানুয়ারি ছাতক গ্যাসক্ষেত্রে নাইকোর খনন কার্যক্রম পরিচালনার সময় বিস্ফোরণ ঘটে যা ঐ গ্যাস ক্ষেত্র ও আশেপাশের পরিবেশ ও জনজীবনের ব্যাপক ক্ষতি করে। নাইকো, ২০১০ সালে ছাতক গ্যাসক্ষেত্রে বিস্ফোরণের জন্য তারা দায়ী নয় মর্মে ঘোষণা চেয়ে এবং গ্যাস বিক্রয়ের অর্থ দাবি করে আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ বিরোধ নিষ্পত্তি সংক্রান্ত সালিশি আদালত (ইকসিড)-এ দুটি সালিসি মোকদ্দমা দায়ের করে। ১০ বছরের দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়া শেষে ইকসিড ট্রাইব্যুনাল ২০০৫ সালের বিস্ফোরণের জন্য যৌথ উদ্যোগ চুক্তির অধীন শর্তসমূহ ভঙ্গের জন্য নাইকোকে দায়ী করে তাদের অভিযুক্ত করে এ বছর রায় দেয়। নাইকো দক্ষতার সঙ্গে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করতে না পারায় যৌথ বিনিয়োগ চুক্তির শর্ত না মানায় এবং পেট্রোলিয়াম শিল্পের আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে সামঞ্জস্যতা বজায় রাখতে ব্যর্থ হওয়ার কারণেই এই বিস্ফোরণের ঘটনাটি ঘটে বলে আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল রায়ে উল্লেখ করেছেন। সরকার বিশেষজ্ঞদের অভিমত নিয়ে ২০১৬ সালের ২৫ মার্চ বাপেক্সের জন্য ১১৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ও বাংলাদেশের জন্য ৮৯৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার নাইকোর কাছে ক্ষতিপূরণ চেয়ে ইকসিড-এ দাবি উত্থাপন করে। রায়ে নাইকোর কাছ থেকে প্রত্যক্ষ ক্ষতিপূরণ ছাড়াও জনসাধারণের পুনর্বাসন, বিস্ফোরণের ফলে জনসাধারণের স্বাস্থ্যহানি, ভূমির ক্ষতিসহ পরিবেশগত ক্ষতিপূরণ চেয়ে ইকসিড-এ দাবি উত্থাপন করার নির্দেশনা রয়েছে।