দাবি মেনে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনুন: শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন


Desk report | Published: 2022-01-21 21:07:15 BdST | Updated: 2024-10-13 23:16:54 BdST

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবি) উদ্ভূত পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন।

ফেডারেশন বলছে, ‘কয়েকদিন ধরে শাবিতে শিক্ষার্থীরা কিছু ন্যায্য দাবি-দাওয়া নিয়ে আন্দোলন করছেন। তাদের আন্দোলনকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।’

দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সর্বোচ্চ এ ফোরামের নেতাদের জোর দাবি, শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক সব দাবি-দাওয়া মেনে নিয়ে দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনা হোক।

বৃহস্পতিবার (২০ জানুয়ারি) ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যাপক ড. ফরিদা ইয়াসমিন বারী ও মহাসচিব অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভুঁইয়ার সই করা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ দাবি জানায় ফেডারেশন।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘নিম্নমানের খাবার পরিবেশন, ছাত্রীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারসহ নানান অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদে গত ১৩ জানুয়ারি রাতে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের ছাত্রীরা ক্যাম্পাসের গোলচত্বরে বিক্ষোভ শুরু করেন। গভীর রাতে উপাচার্যের আশ্বাসে ছাত্রীরা হলে ফিরে যান। পরদিন কয়েকজন ছাত্রী উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে লিখিতভাবে হল প্রভোস্ট জাফরিন আহমেদ লিজার পদত্যাগ, নতুন প্রভোস্ট নিয়োগ এবং হলের অব্যবস্থাপনার দ্রুত কার্যকর সমাধানের দাবি জানান।’

‘উশৃঙ্খল’ শিক্ষার্থীরা উপাচার্যকে লাঞ্ছিত করেছেন উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘উপাচার্য সব সমস্যা সমাধানে ছাত্রীদের কাছে এক মাস সময় চান। তবে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যকে সময় না দিয়ে দাবি মেনে নিতে আলটিমেটাম দিয়ে পুনরায় আন্দোলন শুরু করেন। ১৫ জানুয়ারি সকাল থেকে শিক্ষার্থীরা গোলচত্বরে অবস্থান নিয়ে সড়ক অবরোধ করেন। উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিনদের এক সভায় যাওয়ার সময় হঠাৎ একদল উশৃঙ্খল শিক্ষার্থী তাকে লাঞ্ছিত করার চেষ্টা করে। এসময় উপাচার্যের সঙ্গে থাকা কয়েকজন শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাকে উদ্ধার করে আইআইসিটি ভবনে নিয়ে যান। সেখানে অবরুদ্ধ অবস্থায় একপর্যায়ে উপাচার্য অসুস্থ হয়ে পড়েন। এমতাবস্থায় পুলিশ তাকে উদ্ধার করতে গেলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ শুরু হয়।’

শাবির আন্দোলনকে সরকারবিরোধী রূপ দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে বলে অভিযোগ করে ফেডারেশনের নেতারা বলেন, ‘অভিযোগ রয়েছে, সরকারবিরোধী সুযোগ সন্ধানী মহল ইতোমধ্যে আন্দোলনকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছেন। শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে হলে নতুন প্রভোস্ট নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হলেও একটি মহল কোমলমতি শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলনকে সরকারবিরোধী আন্দোলনে পরিণত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত আছেন।’

উপাচার্যের পদত্যাগে শাবির পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে উল্লেখ করে শিক্ষক নেতারা বলেন, ‘আমরা মনে করি, উপাচার্যের পদত্যাগ সমস্যা সমাধানের একমাত্র উপায় নয়। বরং তা পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটাতে পারে। বর্তমান উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয় এবং শিক্ষার্থীদের উন্নয়নে অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। এরপরও সমাধানযোগ্য একটি বিষয়কে উপাচার্যের পদত্যাগের আন্দোলনে রূপান্তর করার উদ্দেশ্য নিয়ে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।’

শাবি শিক্ষার্থীদের আন্দোলন দেশকে অস্থিতিশীল করার অব্যাহত চক্রান্তের অংশ দাবি করে ফেডারেশনের নেতারা বলেন, ‘বাংলাদেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে বিরাজমান শান্ত পরিবেশকে বিঘ্ণিত করে শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করে একটি মহল কর্তৃক দেশকে অস্থিতিশীল করার অব্যাহত চক্রান্তের এটি একটি অংশ বলে আমরা মনে করি। সরকারের গোয়েন্দা সংস্থাসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি গুরুত্বসহকারে খতিয়ে দেখার আহ্বান জানাই। একই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক সব দাবি-দাওয়া মেনে নিয়ে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন্য শাবি কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন।’