টু-ডু লিস্ট কাজে লাগানোর ৮টি উপায়


স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | Published: 2023-07-29 16:04:37 BdST | Updated: 2024-04-27 23:17:07 BdST

রোজ আমাদের অনেক কাজ থাকে। অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ মাথায় থাকার পরও শেষ করা হয়ে ওঠে না। আবার অনেক সময় কাজের কথা মনেই থাকে না। এমন পরিস্থিতিতে আমাদের সময় ব্যবস্থাপনা এবং লক্ষ্য অর্জনে সহায়ক হতে পারে টু-ডু লিস্ট। নানা কারণে আমরা টু-ডু লিস্ট ঠিকঠাক কাজে লাগাতে পারি না। টু-ডু লিস্ট সঠিকভাবে কাজে লাগানোর কিছু পরামর্শ দেখুন এখানে...

১. কাজ বুঝে অগ্রাধিকার

আমাদের হাতে থাকা কাজগুলোর গুরুত্ব সব সময় এক থাকে না। টু-ডু লিস্ট বানানোর সময় আমাদের বিভিন্ন কাজকে গুরুত্ব দিয়ে শেষ করতে প্রয়োজনীয় সময় বিবেচনায় রেখে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সাজানো প্রয়োজন। কোন কাজকে বেশি কিংবা কম অগ্রাধিকার দেবেন, তা বোঝার জন্য নিজের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যগুলো চিন্তা করে দেখুন।

২. কাজ ভাগ করুন ছোট ছোট অংশে

টু-ডু লিস্টের কাজগুলো অনেক সময় বেশ বড় ও দুঃসাধ্য লাগে। বড় কাজ করার কথা চিন্তা করতে গেলে হতাশা কাজ করতে পারে। হতাশা থেকে কাজ করার ইচ্ছাও চলে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। জটিল ও বড় কাজগুলো ছোট, আরও সহজভাবে করা যায়, এমনভাবে ভাগ করে নিন। এতে দিনের কাজে উৎপাদনশীলতা বাড়ার পাশাপাশি মানসিক চাপও কমে।

৩. বাস্তবসম্মত লক্ষ্য নির্ধারণ করুন

অনেক সময় দেখা যায়, টু-ডু লিস্টে অনেকগুলো কাজ লিখে ফেলতে মন চায়। বাস্তবে অর্জন করা সম্ভব নয়, এমন লক্ষ্য নির্ধারণ করার ফলেই কাজে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। একটি নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে আপনি বাস্তবসম্মতভাবে কী করতে পারেন, সে সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা থাকা উচিত। সময় বিবেচনা করে ছোট কাজগুলো দ্রুত করে ধীরে ধীরে নিজের অভিজ্ঞতা বাড়িয়ে বড় কাজগুলোতে হাত দিতে পারেন।

৪. টাইম ব্লকিং ব্যবহার করুন

সারা দিনকে ছোট ছোট ভাগে ভাগ করে নিন। এটা করলে সারা দিনের করণীয় কাজের জন্যও আলাদা সময় বরাদ্দ রাখতে পারবেন।

আমরা খুব কমই অনেকক্ষণ ধরে মনোযোগ ধরে রাখতে পারি। কাজকে ছোট ছোট করে ভাগ করে নির্দিষ্ট সময়ে করতে গেলে দেখা যাবে, পুরো কাজ মন দিয়ে খুব সহজেই শেষ করতে পারছেন।

৫. প্রযুক্তির সহায়তা নিন

টু-ডু লিস্ট আরও কার্যকরভাবে ব্যবহার করার জন্য প্রযুক্তির সাহায্য নিন। ফোনে বিভিন্ন প্রোডাক্টিভিটি অ্যাপ ও টুল ব্যবহার করে আপনি আপনার টু-ডু লিস্টের কার্যকারিতা বাড়াতে পারেন। এসব অ্যাপ আপনার কাজগুলোকে গুছিয়ে এবং সময়মতো শেষ করার জন্য সহায়তা করবে। চাইলে কাজ শেষ করে আপনার যে ভালো লাগা তৈরি হয়, তা লিখেও রাখতে পারবেন এসব অ্যাপে। পরবর্তী সময়ে হতাশার জন্ম নিলে আপনার শেষ করা কাজের তালিকা এবং কাজ করে আপনার যে অনুভূতি হয়েছিল, তা পড়ে নিজেকে চাঙা করে নিতে পারবেন।

৬. টু মিনিটস রুল মেনে চলুন

কিছু কাজ আছে, শেষ করতে তেমন সময় লাগে না। কিন্তু অনেক সময় এমন ছোট কাজ করতেই আলসেমি ভর করে। আলসেমি লাগলেও এ ধরনের কাজ শেষ করার অভ্যাস করুন। আর দুই মিনিটে করা যায়, এমন কাজগুলো শেষ করাকে বলে ‘টু মিনিটস রুল’ মেনে চলা।

রোজ ছোট ছোট করে কাজগুলো দ্রুত শেষ করলে টু-ডু লিস্টের কাজের বড় অংশ শেষ করা যায়। এই পদ্ধতি সময় যেমন বাঁচায়, তেমনি কাজের ওপর আপনার নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে।

৭. বিক্ষিপ্ততা কমান

কাজের সময় ফোন এলে, নোটিফিকেশনের শব্দ পেলে, কেউ ডাকাডাকি করলে মনোযোগ সরে যায়। মন বিক্ষিপ্ত হয়ে গেলে কাজ শেষ করতে সময় তো লাগেই, কাজের গুণগত মানও কমে। মন বিক্ষিপ্ত করে, আপনার আশপাশে থাকা এমন বিষয়গুলো চিহ্নিত করুন। চিহ্নিত করা হয়ে গেলে এমন পদক্ষেপ নিন যেন তা আপনার কাজ করার ক্ষেত্রে বাধা হয়ে না দাঁড়ায়। নিজের কাজের জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি করলে তা আপনাকে সঠিক পথে থাকতে এবং আরও দক্ষতার সঙ্গে কাজ সম্পন্ন করতে সাহায্য করবে।

৮. বারবার পর্যালোচনা করুন

নিয়মিতভাবে আপনার টু-ডু লিস্ট পর্যালোচনা করুন, বিশেষ করে প্রতিদিনের শেষে বা সপ্তাহের শেষে। দিন শেষে নিজের সঙ্গে কথা বলে আরও ভালোভাবে কীভাবে নিজের কর্মদক্ষতা বাড়ানো যায়, সেসব বিষয় বের করুন। সারা দিনের কাজ বিশ্লেষণ করলে আরও ভালোভাবে টু-ডু লিস্ট করার উপায় জেনে যাবেন। নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ শেষ করার কৌশলও আপনার জানা হয়ে যাবে।

তথ্যসূত্র: রিডার্স ডাইজেস্ট