‘‘জননিরাপত্তার জন্য হুমকি’’ হিসেবে বিবেচনা করে সাইফুল বাতেন টিটোর লেখা বই “বিষফোঁড়া” নিষিদ্ধ করেছে সরকার। গত ১৮ জুন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বইটিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে এবং ২৪ আগস্ট মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে নিষিদ্ধ ঘোষণার বিজ্ঞপ্তি গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়। কওমি মাদ্রাসার শিশুদের ধর্ষণের ঘটনা নিয়ে বইটি লেখা হয়েছিল।
গেজেটে বলা হয়, “সরকারের কাছে এ মর্মে প্রতীয়মান হয় যে, সাইফুল বাতেন টিটো রচিত ও নারায়ণগঞ্জ আড়াইহাজারের জালাকান্দির ‘জংশন’ প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত কওমি মাদ্রাসার শিশু ধর্ষণ উপাখ্যান ‘বিষফোঁড়া’ উপন্যাসটির বিষয়বস্তু দেশের শান্তি-শৃঙ্খলার পরিপন্থী। ইতোমধ্যে উপন্যাসটি জননিরাপত্তার জন্য হুমকি বলে বিবেচিত হওয়ায় বাংলাদেশে বইটি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলো।”
বইটির লেখক সাইফুল বাতেন টিটো জানান, চলতি বছর অমর একুশে গ্রন্থমেলায় জংশন প্রকাশনী থেকে বইটি প্রকাশিত হয়। বইটির বেশ ভালো বিক্রি হচ্ছিল, প্রথম মুদ্রণের ৫০০ কপি বিক্রি হয়ে যাওয়ার পর গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) বইটির শেষ ২৮ কপি তুলে নিয়ে যায়। এ সময় তারা জানায়, বইটি একটু সেনসেটিভ, লেখক ও প্রকাশকের নিরাপত্তা হুমকি হতে পারে। পরে আবার বইটি প্রকাশ ও বিক্রির অনুমতি দেয় ডিএমপি।
লেখকের দাবি, জননিরাপত্তায় আঘাত সৃষ্টির মতো বইটিতে কিছু লেখা হয়নি। বইটি লেখার আগে এক বছর তিনি কওমি মাদ্রাসায় যৌন নিপীড়ন বিষয়ক সংবাদ নিয়ে গবেষণা করেন। সেই সংবাদের তথ্য-উপাত্তের ওপর ভিত্তি করে মাদ্রাসাগুলোতে গিয়ে শিক্ষার্থী, ভিক্টিম, শিক্ষক ও প্রশাসনের লোকদের সাক্ষাতকার নেন।
টিটো দাবি করেন, তার বইয়ে কোনো অনুভূতিতে আঘাত হানতে পারে এমন কোনো শব্দ নেই। তথ্য উপাত্তের ভিত্তিতে একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর যৌন নিপীড়নের কাহিনী তুলে এনেছেন, এখানে সামান্যতম অসত্য তথ্য বা কাউকে আঘাত করতে পারে এমন তথ্যাবলি নেই।
বইটি গেজেট করে নিষিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় তিনি নিজেও বিস্মিত। তিনি আরও জানান, বইটি প্রকাশ হওয়ার কিছু দিনের মধ্যেই তাকে প্রচুর হুমকি দেওয়া হয়। তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক আইডিটিও রিপোর্ট করে বন্ধ করে দেওয়া হয়।
তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলেও জানান।
