ইসলামের সম্মান সুরক্ষায় পৃথক ধারার দাবি


ঢাকা | Published: 2023-08-27 00:38:31 BdST | Updated: 2024-04-28 21:16:36 BdST

রাষ্ট্রধর্মের সম্মান সুরক্ষা দেয়া রাষ্ট্রের সাংবিধানিক দায়িত্ব। সুতরাং প্রস্তাবিত সাইবার নিরাপত্তা আইনে রাষ্ট্রধর্ম ইসলামের সম্মান সুরক্ষায় পৃথক ধারা সংযুক্ত করতে হবে। রাষ্ট্রধর্মের অবমাননা রাষ্ট্রদ্রোহিতা। সেক্ষেত্রে রাষ্ট্রধর্মের অবমাননায় এ আইনে সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ডের বিধান রাখতে হবে” এমন দাবীতে `ধর্মপ্রাণ নাগরিক সমাজ’ ব্যানারে আজ শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক মানববন্ধনের আয়োজন করেছে প্রায় শতাধিক ব্যক্তি।

মানববন্ধনে ধর্মপ্রাণ নাগরিক সমাজের আহবায়ক এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র সংগঠক মুহম্মদ আবু সায়েম রিমন মূল বক্তব্য পাঠ করেন। মানববন্ধনে আরো বক্তব্য রাখেন, সদস্য সচিব সুপ্রীম কোর্টের অ্যাডভোকেট মুহম্মদ মাসউদুজ্জামান, সদস্য অ্যাডভোকেট মুহম্মদ জহিরুদ্দিন সহ আরো অনেকে।

মূল বক্তব্যে ধর্মপ্রাণ নাগরিক সমাজের আহবায়ক মুহম্মদ আবু সায়েম রিমন বলেন, আমরা জানতে পেরেছি সরকার সাইবার নিরাপত্তা আইন ২০২৩ নামক একটি নতুন আইন পাশ করতে যাচ্ছে। আইনটি পাশ করার পূর্বে সরকার ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা এজেন্সি’ নামক একটি ওয়েবসাইটে আইনটির খসড়া আপলোড করে নাগরিকদের মন্তব্য জানতে চেয়েছেন। আমরা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে সেই মতামত দেয়ার জন্য আজকে এই মানববন্ধনের আয়োজন করেছি।

মুহম্মদ আবু সায়েম রিমন বলেন, বাংলাদেশের রাষ্ট্রধর্ম হচ্ছে ‘ইসলাম’। রাষ্ট্রধর্মের সম্মান সুরক্ষা দেয়া রাষ্ট্রের সাংবিধানিক দায়িত্ব। কিন্তু দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে, রাষ্ট্রধর্মের সম্মান সুরক্ষায় দেশে পৃথক কোন আইন নেই। প্রায়ই দেখা যায় কিছু দুষ্কৃতিকারী রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম নিয়ে কটূক্তি করে। কিন্তু রাষ্ট্রধর্মের সম্মান সুরক্ষায় পৃথক কোন আইন না থাকায় সে অপরাধ কার্যকর উপায়ে রোধ করা যায় না। সরকার যেহেতু আমাদের কাছে প্রস্তাবিত সাইবার নিরাপত্তা আইন সম্পর্কে মতামত জানতে চেয়েছে, তাই বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ নাগরিকদের মতামত হচ্ছে, প্রস্তাবিত সাইবার নিরাপত্তা আইনে রাষ্ট্রধর্ম ইসলামের সম্মান সুরক্ষায় পৃথক ধারা সংযুক্ত করতে হবে। রাষ্ট্রধর্মের অবমাননা রাষ্ট্রদ্রোহিতা হিসেবে ঘোষণা করতে হবে। সেক্ষেত্রে রাষ্ট্রধর্মের অবমাননায় সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ডের বিধান রাখতে হবে।

ধর্মপ্রাণ নাগরিক সমাজের সদস্য সচিব সুপ্রীম কোর্টের অ্যাডভোকেট মুহম্মদ মাসউদুজ্জামান বলেন, প্রস্তাবিত আইনের খসড়া পাঠে আমরা জানতে পেরেছি, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত বা ২৮ ধারার সাজা হ্রাস করা হবে, এটি খুব উদ্বেগজনক বিষয়! কারণ ২০১৩ সালের সাইবার ট্রাইবুনাল প্রতিষ্ঠার পূর্বে অনলাইনে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত রোধে কার্যকরী শক্ত কোনো আইন ছিলো না। ফলে এ অপরাধ রোধ হচ্ছিলো না। যার প্রতিক্রিয়ায় দেশে ভয়ংকর অস্থিতিশীলতা তৈরী হয় এবং শাপলা চত্বরে আন্দোলনের মত ঘটনা ঘটে। ২০১৩ সালের পর শক্ত আইন কার্যকরের মাধ্যমে অনলাইনে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অপরাধ উল্লেখযোগ্য হারে কমে যায় এবং দেশে স্থিতিশীলতা ফিরে আসে। কিন্তু এই সাজা যদি হ্রাস বা দূর্বল করা হয় তাহলে পুনরায় ধর্মীয় অনূভুতিতে আঘাতের অপরাধ বৃদ্ধি পাবে। যার প্রতিক্রিয়ায় দেশে আবারও অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরী হবে। অ্যাডভোকেট মুহম্মদ মাসউদুজ্জামান বলেন, ২৮ ধারার সাজা হ্রাস তাই কখনই যুক্তিসঙ্গত হবে না, বরং এ ধারায় সাজা আরো বৃদ্ধি করতে হবে।

ধর্মপ্রাণ নাগরিক সমাজের সদস্য অ্যাডভোকেট মুহম্মদ জহিরুদ্দিন বলেন, বর্তমানে অনলাইনে অনেক নিষিদ্ধ বস্তুর ক্রয়-বিক্রয়, লেনদেন ও প্রচারণা হয়। যেমন: মদ ও নেশাজাতীয় দ্রব্য, নিষিদ্ধ বই, বিষ্ফোরক আতশবাজি, জুয়া বা বেটিং, পতিতাবৃত্তি, কিডনী ক্রয়-বিক্রয়, সমকামিতা ইত্যাদি অনলাইনের মাধ্যমে অনেক সহজলভ্য আকার ধারণ করেছে। প্রস্তাবিত সাইবার নিরাপত্তা আইনে অনলাইনে এ সমস্ত নিষিদ্ধ বস্তুর প্রচার, ক্রয়-বিক্রয় ও লেনদেনকেও অপরাধ হিসেবে অন্তর্ভূক্ত করতে হবে।

মানববন্ধনে ধর্মপ্রাণ নাগরিক সমাজের পক্ষে আরো উপস্থিত ছিলেন- মুহম্মদ আরিফুল খবীর, মুহম্মদ হাবীবুর রহমান, মুহম্মদ রওশন আলী, অ্যাডভোকেট মুহম্মদ জাভেদ হাসানসহ ধর্মপ্রাণ নাগরিক সমাজের শতাধিক সদস্য।