ছাত্রলীগের শূন্যপদ পূরণে চূড়ান্ত পর্যায়ে আছি: জয়


Dhaka//sarabangla | Published: 2021-01-17 06:02:58 BdST | Updated: 2024-05-21 11:02:36 BdST

ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির শূন্য পদগুলো পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে না। এটি জয়-লেখকের সাংগঠনিক ব্যর্থতা কি না— এমন প্রশ্নের জবাবে আল নাহিয়ান খান জয় বলেন, আমরা দায়িত্ব পাওয়ার পর প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল বিতর্কিত বিষয়গুলো সমাধান করা। আমরা আসার পর ৩২ জনকে অব্যাহতি দিয়েছিলাম, যা এর আগে ইতিহাসে কেউ করতে পারেনি। আমরা সেই কঠিন কাজটিও করেছি। আমাদের পরের চ্যালেঞ্জ ছিল সেই শূন্য জায়গায় যোগ্য নেতৃত্ব নিয়ে আসা। আমাদের কমিটি ৩০১ সদস্যের। সেখানে সারাদেশে ছাত্রলীগের নেতাকর্মী আছেন ৫০ লাখ। তাই এখানে সবাইকে জায়গা দেওয়া সম্ভব না এবং সবার মন খুশি রাখাও অনেক কঠিন বিষয়। তারপরও আমরা যোগ্য নেতৃত্বের মাধ্যমে এই জায়গাগুলো পূরণের চেষ্টা করি।

তিনি আরও বলেন, শূন্যপদ পূরণের যে কাজটি, সেটির মোটামুটি চূড়ান্ত পর্যায়ে আছি। কয়েকটি বিষয় নিয়ে যাচাই-বাছাই হচ্ছে। সেই যাচাই-বাছাইয়ের পর আমরা শূন্য পদগুলো পূরণের বিষয়টি তুলে ধরব। সেটি একসপ্তাহের মধ্যেও হয়ে যেতে পারে।

কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে প্রেস রিলিজ দিয়ে কমিটি ঘোষণাকে কেউ কেউ ভালো চোখে দেখেননি— এ বিষয়ে জয় বলেন, সারাদেশে তখন আতঙ্কজনক পরিস্থিতি ছিল। সেখানেও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা কিন্তু কাজ করেছে। এখন আমরা করোনার দ্বিতীয় ঢেউ পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে রাখছি। যেসব জায়গায় আমাদের কমিটিগুলো অনেক পুরনো তথা মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেছে, সেই কমিটিগুলো আমরা সবার সঙ্গে সমন্বয় করে দেবো। এর মধ্যে বেশকিছু জেলা কমিটি করেছিও। তাছাড়া কোভিডের সময় নেত্রীর নির্দেশে মানবিক কর্মকাণ্ডে জোর দিতে হয়েছে। সব মিলিয়ে বলব, আমরা ঠিক পথেই রয়েছি। আশা করছি জনপ্রিয় ছাত্রসংগঠন হিসেবে শিক্ষার্থীদের জন্য আলোকবর্তিতা নিয়েই আমরা এগিয়ে যাব।

আওয়ামী লীগের যে চার কেন্দ্রীয় নেতা ছাত্রলীগের দেখভাল করেন, তাদের একজন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক। ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটি নিয়ে তার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ছাত্রলীগের সম্মেলনের বিষয়টি এখন আমাদের মাথায় নেই। ছাত্রলীগ যে কাজ করে যাচ্ছে, তাতে তাদের সাধুবাদ জানানো হয়েছে। আপাতত ছাত্রলীগের সম্মেলন নিয়ে আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে আমরা কোনো ইঙ্গিত পাইনি।

জয়-লেখকের নেতৃত্বাধীন ছাত্রলীগ কমিটির মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে নানক বলেন, মেয়াদোত্তীর্ণ তো বলা যাবে না। কারণ আগের দু’জনকে অব্যাহতি দেওয়ার পর তারা ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছিল। পরে তাদের পূর্ণ দায়িত্বই দেওয়া হয়েছে। সেদিন থেকে যদি সময় দেন, তাহলে কিন্তু তাদের সময় আছে।

তিনি আরও বলেন, তাছাড়া নতুন সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকেরা আমাদের দৃষ্টিতে ভালো কাজ করছে। করোনার মধ্যে মানবিক সহায়তার সময় ভালো কাজ করেছে। ভাস্কর্য নিয়ে উগ্র মোলবাদীদের যে আস্ফালন, তার বিরুদ্ধে ছাত্রলীগ সুন্দর দায়িত্ব পালন করছে। ঢাকা মহানগরসহ সারাদেশে দায়িত্ব পালন করেছে। কাজেই এখন পর্যন্ত আমাদের ওপর নেত্রীর নির্দেশনা— তাদের (জয়-লেখক) দিয়ে সংগঠনটিকে একটি শৃঙ্খলার মধ্যে, একটি নিয়মের মধ্যে নিয়ে আসা হোক। যে কারণে আমরা তাদের তাগিদ দিচ্ছি জেলা কমিটিগুলো পূর্ণাঙ্গ করার। অনেক জেলায় পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি অনেক বছর হয়ে গেছে। এ ধরনের কমিটিগুলোকে পূর্ণাঙ্গ করতে ক্র্যাশ প্রোগ্রাম নেওয়ার জন্য আমরা বলেছি।

জানতে চাইলে ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় বলেন, আমি ও আমার সাধারণ সম্পাদক একটি বিশেষ পরিস্থিতিতে দায়িত্ব পেয়েছি। গত বছরের ৪ জানুয়ারি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের অভিভাবক, আমাদের প্রাণপ্রিয় আপা (শেখ হাসিনা) আমাদের পূর্ণাঙ্গ দায়িত্ব দেন। সেই দায়িত্বের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগ যে অতীত ইতিহাস ঐতিহ্যের ধারক-বাহক, তা এগিয়ে নিয়ে যেতে কাজ করে যাচ্ছে। তৃণমূলের নেতাকর্মীরাসহ প্রত্যেকে পরিশ্রম করে যাচ্ছে।

জয় আরও বলেন, আমাদের একমাত্র নেত্রী ছাত্রলীগকে দিকনির্দেশনা দিয়ে থাকেন। সম্মেলনের বিষয়টিও তিনি নিজেই দেখেন। ছাত্রলীগের যদি সম্মেলন হয়, সে সম্মেলনে তিনিই প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকেন। ফলে তিনি নির্দেশনা দেবেন, কবে সম্মেলন হবে। আমাদের দায়িত্ব হলো সংগঠনটাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। সেই দায়িত্ব আমরা পালন করছি। নেত্রী নির্দেশনা দিলেই সঙ্গে সঙ্গে সম্মেলনের জন্য কাজ শুরু করব।