ছাত্র অধিকার পরিষদের ১৮ জনকে আসামি করে ছাত্রলীগের মামলা


Desk report | Published: 2022-10-08 20:46:45 BdST | Updated: 2024-05-18 22:02:40 BdST

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ছাত্র অধিকার পরিষদ আয়োজিত স্মরণসভায় হামলার ঘটনার পর ছাত্র অধিকার পরিষদের ১৮ জনকে দায়ী করে মামলা করেছেন ছাত্রলীগের সাংগাঠনিক সম্পাদক মো. নাজিম উদ্দিন। শাহবাগ থানার পরিদর্শক গোলাম মোস্তফা শনিবার সকালে এ তথ্য জানান।

শুক্রবার বিকেলে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে হামলার ঘটনা ঘটে। বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা ‘আবরার ফাহাদ স্মৃতি সংসদ’-এর ব্যানারে আবরার ফাহাদের তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এ স্মরণসভার আয়োজন করে। একপর্যায়ে ছাত্রলীগ সভায় হামলা করলে ছাত্র অধিকার পরিষদের ১৫ জন আহত হয়। তারাও ইট পাটকেল ছোড়ে।

মামলায় আসামি করা হয় ছাত্র অধিকার পরিষদের সহ-সভাপতি মো. তরিকুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এইচ এম রুবেল হোসেন, সদস্য মো. তসলিম হোসাইন অভি ও মিজান উদ্দিন, ছাত্র অধিকার পরিষদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি আকতার হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মো. আকরাম হোসেন, সহ-সভাপতি আসিফ মাহমুদ, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম সম্পাদক আব্দুল কাদের, ছাত্র অধিকার পরিষদ ঢাকা কলেজ শাখার সহ-সভাপতি মো. রাকিব, বংশাল থানা ছাত্র অধিকার পরিষদের সদস্য মো. ওমর ফারুক জিহাদ, ছাত্র অধিকার পরিষদের কর্মী তাওহীদুল ইসলাম তুহিন, মামনুর রশিদ, নাজমুল হাসান, মো. সাদ্দাম হোসেন, ইউসুফ হোসেন, মো. বেলাল হোসেন, মো. আবু কাউছার হাওলাদার ও মাহফুজুর।

নাজিম উদ্দিন বলেন, ‘আমরা টিএসসিতে প্রোগ্রামে যাচ্ছিলাম। তারা (ছাত্র অধিকার পরিষদ) কিছু স্কুলের শিক্ষার্থী, বহিরাগতদের নিয়ে আবরার হত্যার বিচার চেয়ে প্রোগ্রাম করছে। এখানে তারা সরকারকে, ছাত্রলীগকে গালিগালাজ করছে। এ সময় আমরা তাদেরকে বলি আবরার তো আমাদের ছাত্র নয়। এখানে প্রক্টরিয়াল টিম আসে, তারা জানায় এ প্রোগ্রামের অনুমোদন নেই। তারা প্রক্টরিয়াল টিম এবং আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার শুরু করে। একপর্যায়ে তাদের কিছু লোক ইট ছুঁড়লে আমার মাথায় এসে পড়ে। আমাদের আরও কয়েকজন আহত হয়। পরে আরও কিছু শিক্ষার্থী তাদের ধাওয়া দিয়ে বিতাড়িত করে। আমরা শাহবাগ থানায় মামলা দায়ের করেছি।’

একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, আবরার ফাহাদের মৃত্যুবার্ষিকীতে পরিষদের নেতাকর্মীরা রাজু ভাস্কর্যে স্মরণসভা শুরু করলে ছাত্রলীগের একদল নেতা রাজু ভাস্কর্যে গিয়ে বাধা দেন। সাড়ে ৩টার দিকে আবরারের স্মরণসভার বক্তব্য শুরু হলে লাঠিসোঁটা, লোহার পাইপ হাতে আশপাশ থেকে রাজু ভাস্কর্যে যান ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। তাদের একটি অংশ ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের পেটাতে থাকে, আরেকটি অংশ স্মরণসভার চেয়ার ভাঙচুর করে। স্মরণসভার ব্যানার-ফেস্টুনে আগুন ধরিয়ে দেয়।

মামলার এজাহারে নাজিম উদ্দীন উল্লেখ করেন, বিবাদীরা আমাদের উপর অতর্কিতভাবে তাদের সঙ্গে থাকা লোহার রড, হকিস্টিক, বাশের লাঠিসহ তাদের সঙ্গে লুকিয়া রাখা দেশি অস্ত্রশস্ত্রসহ আমাদের উপর আক্রমণ করে আমিসহ মাহবুব খান, কাজী ইব্রাহিম, আরিফ শাহরিয়ারকে মারপিট করে। আসামি আকতার, আকরাম এবং মাহফুজ তাহার হাতে থাকা লোহার রড দিয়ে আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথায় স্বজোরে আঘাত করিলে আমার ডান চোখের উপরে গুরুতর জখম হই। আমাদেরকে চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেল উল্লেখিত আসামিরা অজ্ঞাতনামা ১৪০/১৫০ জন বিবাদীসহ জরুরি বিভাগের সামনে দেশি অস্ত্রশস্ত্রসহ হাজির হয়ে আমাদের পুনরায় আক্রমণ করে এবং প্রত্যন্ত এলাকা থেকে চিকিৎসার জন্য আগত মুমূর্ষু, নারী ও শিশুদের আমাদের উপর আক্রমণ করে এবং তাদের চিকিৎসা ব্যহত করে।’

শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূর মোহাম্মদ বলেন, ‘ছাত্রলীগের উপর হামলা করা হয়েছে বলে একটি অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগের ভিত্তিতে জিজ্ঞাসাবাদ করছি। জিজ্ঞাসাবাদ করে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। থানায় বর্তমানে ছাত্র অধিকার পরিষদের ২০ নেতাকর্মী আটক রয়েছে।’