চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী সাংবাদিককে ছাত্রলীগের হেনস্তা


চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় | Published: 2023-02-10 12:30:36 BdST | Updated: 2024-05-05 17:57:11 BdST

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের হেনস্তার শিকার হয়েছেন সমকালের চবি প্রতিনিধি মারজান আক্তার। বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

উপস্থিত শিক্ষার্থীরা জানান, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) চারুকলা ইনস্টিটিউটকে ক্যাম্পাসে স্থানান্তরের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ধাওয়া করছিলেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এসময় ভিডিও করতে গেলে মারজান আক্তারকে হেনস্তা করেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। একপর্যায়ে মারজান আক্তারকে উদ্দেশ্য করে নেতাকর্মীরা বলেন ‘তোর নিরাপত্তা কে দেয় তা দেখবো’। পরে চারদিক থেকে ঘিরে তাকে উত্ত্যক্ত করেন তারা। এ সময় আরটিভির ফটো সাংবাদিক এমরাউল কায়েস মিঠুও হেনস্তার শিকার হন।

ঘটনাস্থলের একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, ছাত্রলীগের একদল নেতাকর্মী মারজান আক্তারের মোবাইলফোন ও তার সঙ্গে থাকা ব্যাগ কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন।

সাংবাদিক মারজান আক্তারকে হেনস্তাকারীরা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের ভার্সিটি এক্সপ্রেস ও বাংলার মুখ গ্রুপের নেতাকর্মীরা বলে জানা গেছে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সদস্য ও চবি যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী মারজান বলেন, 'ছাত্রলীগের অনুসারীরা যখন চারুকলার আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের বাধা দিচ্ছিলেন, তখন পেশাগত দায়িত্ব হিসেবে আমি মোবাইলে ফুটেজ নিচ্ছিলাম। এসময় ছাত্রলীগের ভিএক্স গ্রুপের অনুসারীরা এসে আমাকে আটকায় ও ভিডিও ডিলিট করার জন্য চাপ দিতে থাকে। আমি ভিডিও ডিলিট করবোনা বলায় তারা আমাকে বিভিন্নভাবে উত্ত্যক্ত করতে থাকে। এসময় তারা বলছিলেন ‘তোর নিরাপত্তা কে দেয় আমরা দেখবো’। চারদিক থেকে ঘিরে ধরে আমার সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে।'

তিনি আরও বলেন, 'পরে সেখান থেকে চলে আসার সময় তারা আমার মোবাইলফোন ও ব্যাগ কেড়ে নেওয়ারও চেষ্টা করেন। লিখিতভাবে এ বিষয়ে প্রক্টরের কাছে অভিযোগ করেছি।’

ঘটনাস্থলে উপস্থিত শিক্ষার্থীরা জানান, ছাত্রলীগের বগিভিত্তিক সংগঠন ভিক্স গ্রুপের অনুসারী ও ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মারুফ ইসলাম, সমাজতত্ত্ব বিভাগের ২০১৫-১৬ সেশনের শিক্ষার্থী মারুফ হাসান, বাংলা বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী তৌহিদুল হক ফাহাদ, একই সেশনের রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের শহীদুর রহমান স্বপনসহ আরও ১০-১৫ জন ছাত্রলীগ কর্মী সমকালের চবি প্রতিনিধি মারজানকে হেনস্তা করেন।

এ বিষয়ে প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়া বলেন, 'সাংবাদিকদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগ পেয়েছি। এমন আচরণের বিষয়ে আমরা এর আগেও ব্যবস্থা নিয়েছি। লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে পুরো ঘটনাটি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবো।' তিনি আরও বলেন, 'চারুকলার শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে অবস্থানের বিষয়ে আগে থেকে আমাদেরকে না জানানোর কারণে আমরা প্রস্তুত ছিলাম না। এ কারণে ঘটনাস্থলে প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা না থাকায় এ ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে।'

এর আগে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় ছাত্রলীগের উপগ্রুপ বাংলার মুখ ও ভিএক্সের নেতাকর্মীরা আন্দোলনকারীদের বাধা দেন। এসময় তারা ব্যানার-ফেস্টুন ছিঁড়ে ফেলেন ও শিক্ষার্থীদের ধাক্কা দিয়ে শহীদ মিনার থেকে উঠিয়ে দেয়। কয়েকজন উঠতে না চাইলে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা তাদের মারধরও করেন বলে অভিযোগ উঠেছে।