যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয়ের গভর্নর জেবি প্রিজকার সম্প্রতি তাঁর এক ভাষণে বলেছেন, ‘পৃথিবীতে সফল হতে চাইলে আপনাকে অবশ্যই বেক্কল বা বেকুব চিহ্নিত করতে পারার নিজস্ব পদ্ধতি থাকতে হবে।’ এটিই বাস্তবতা। প্রযুক্তি এবং বিজ্ঞানের বিকাশ এত দ্রুত হচ্ছে যে, এর সঙ্গে সাধারণ মানুষের তাল মেলানোই কঠিন। এই কঠিন সময়ে টিকে থাকতে হলে এবং সফল হতে চাইলে অবশ্যই আপনার একটি নিজস্ব পদ্ধতি থাকতে হবে যা দিয়ে আপনি আপনার চারপাশের বেকুবদের চিহ্নিত করবেন।
বেকুব চিহ্নিত করার স্বতঃসিদ্ধ কোনো উপায় নেই। তবে মোটাদাগে বেশ কিছু উপায় এই সময়ে অনুসরণ করা যেতে পারে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের এক নিবন্ধে বেকুব চেনার ক্ষেত্রে পাঁচটি ‘রেড ফ্ল্যাগস’ বা বিপদ সংকেতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
১. যারা বই না পড়াটাকেই গর্বের বিষয় মনে করে তাদের থেকে দূরে থাকুন
কেউ যদি বই না পড়ে এবং বিষয়টি নিয়ে গর্ববোধ করে, তবে তার কাছ থেকে দূরে থাকুন। কারণ, বই হয়তো সব জ্ঞানের আধার নয়, কিংবা সব বিষয় একটি বইয়ে উঠেও আসে না, তারপরও বই পড়ার উপকারিতা রয়েছে। কোনো একটি বিষয়ের ভালো-মন্দ উভয় দিক জানার ক্ষেত্রে বই নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে।
২. যারা যেকোনো বিষয়কে কেবল সার-সংক্ষেপে দেখতে পছন্দ করে তাদের থেকে দূরে থাকুন
প্রযুক্তির এই চরম উৎকর্ষের যুগে সব তথ্যই যখন অনলাইনে পাওয়া যায়, তখন বর্তমান প্রজন্মের বড় একটি অংশই মনে করে, আগেকার বইগুলো অকেজো, বাহুল্য এবং সেই বইগুলোর বিষয়বস্তুকে ছোট ছোট ব্লগ আকারে হাজির করা উচিত। এমন মনোভাবের মানুষ থেকে দূরে থাকুন। সবকিছুকে প্রযুক্তির লেন্স দিয়ে দেখার এই প্রবণতা খুবই মারাত্মক এবং অনেক সময়ই হঠকারী।
৩. সম্পদশালী মাত্রই বুদ্ধিমান—এমন চিন্তা থেকে দূরে থাকুন
অনেকে মনে করেন, যারা সম্পদশালী তারা অনেক বুদ্ধিমান। এই ধারণা সব সময় সঠিক নয়। উদাহরণ হিসেবে অনেকে ক্রিপ্টোকারেন্সির অন্যতম পথিকৃৎ স্যাম ব্যাঙ্কম্যান ফ্রাইডের কথা বলেন। স্মার্ট এবং বুদ্ধিমান হিসেবে স্যামের বেশ খ্যাতি ছিল। কিন্তু তাঁর বুদ্ধিমত্তা কিংবা স্মার্টনেস তাঁর পতন রুখতে পারেনি। রাতারাতি কোটিপতি থেকে স্রেফ শূন্যে নেমে এসেছেন তিনি।
৪. কথায় কথায় যারা ‘কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা’, চ্যাটজিপিটির মতো প্রযুক্তির উদাহরণ দেয়
কিছু মানুষ রয়েছে, যারা কথায় ‘কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা’, চ্যাটজিপিটির মতো প্রযুক্তির উদাহরণ দেয়। কিন্তু তারা এর অগ্রপশ্চাৎ বিবেচনা না করেই, এর ইতিবাচক-নেতিবাচক দিক না ভেবেই এর পক্ষ নিয়ে থাকে। যেমন কিছুদিন আগে, একদল মানুষ মেটাভার্স নিয়ে অতি উৎসাহী ছিল। তাদের ধারণা ছিল, মেটাভার্স সবকিছু রাতারাতি বদলে দেবে। কিন্তু তা হয়নি। এখন তারাই আবার চ্যাটজিপিটি নিয়ে ওকালতি করছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত চ্যাটজিপিটি যা সম্ভাবনা দেখিয়েছিল তার বেশির ভাগই অর্জন করতে পারেনি। এদের থেকে দূরে থাকুন।
৫. যারা নিজেদের আইকিউ নিয়ে বড়াই করে তাদের থেকে দূরে থাকুন
নিউইয়র্ক টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে একবার স্টিফেন হকিং বলেছিলেন, ‘যারা নিজেদের আইকিউ নিয়ে বড়াই করে তারা মূলত ব্যর্থ।’ সাধারণত এই ধরনের মানুষ কাজের চেয়ে কথাই বেশি বলে। তাই এ ধরনের মানুষ থেকে দূরে থাকুন।
ছবি: প্রথম আলো , লেখা: আজকের পত্রিকা