৩ আ.লীগ নেতাকে মেরে হাসপাতালে পাঠালেন ছাত্রলীগ সেক্রেটারি


টাইমস অনলাইনঃ | Published: 2017-08-07 05:51:11 BdST | Updated: 2024-05-13 07:31:21 BdST

বরগুনার তালতলী উপজেলায় চাঁদা না দেয়ায় আওয়ামী লীগের তিন নেতাকে মেরে হাসপাতালে পাঠিয়েছেন উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নয়ন বেপারী ও তার লোকজন।

রোববার দুপুর ২টার দিকে তালতলী বাজারের একটি দোকানে এ মারধরের ঘটনা ঘটে। পরে স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে তালতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কম্পেলেক্সে নিয়ে আসলে আহত উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সোহরাব জোমাদ্দাকে স্বাস্থ্য কম্পেলেক্সে ভর্তি করে অন্য দুইজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়।

আহত অন্য দুইজন হলেন তালতলী উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের তিন নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আবুল কালাম ও একই ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের সদস্য জাহাঙ্গীর হোসেন।

আহতরা জানান, তালতলী উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের খোট্টারচর এলাকায় প্রস্তাবিত তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য তিনশ একর জমি ক্রয়ের জন্য উপজেলা আওয়ামীগ নেতা সোহরাব জোমাদ্দার, জাহাঙ্গীর হোসেন ও আবুল কালাম মধ্যস্থতা করছিলেন।

এই জমি মধ্যস্থতার জন্য উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নয়ন বেপারী তাদের কাছে পাঁচ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিলেন। কিন্তু এই চাঁদার টাকা দিতে তারা বিভিন্ন সময় অপারগতা প্রকাশ করেন।

এরই জের ধরে তালতলী বাজারের একটি দোকানে প্রস্তাবিত তাপবিদ্যুত কেন্দ্রের জমিজমা সংক্রান্ত আলোচনা চলাকালে রোববার দুপুরে প্রকাশ্যে শতশত জনতার সামনে তালতলী উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নয়ন বেপারীর নেতৃত্বে সাত-আটজনের একটি দল তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে ব্যাপক মারধর করে।

তাদের মারধরে উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সোহরাব জোমাদ্দার গুরুতর আহত হন। পরে তাদের সবাইকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে তালতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কম্পেলেক্সে নিয়ে গেলে সোহরাব জোমাদ্দারকে ভর্তি রেখে বাকি দুইজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করে ছেড়ে দেয়া হয়।

এ বিষয়ে আহত তালতলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সোহরাব জোমাদ্দার বলেন, সন্ত্রাসী নয়ন বেপারী ছাত্রলীগের ব্যানারে চাঁদাবাজি, রাখাইন সম্প্রদায়ের মূর্তিচুরিসহ নানা সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়ে আসছে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের কাছে নয়ন পাঁচ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করছে। চাঁদা না পেয়ে আমাদের ওপর সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে আহত করে। এর আগেও নয়ন নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের তিন নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদস্য জাহাঙ্গীর হোসেনকে মারধর করেছেন। এ ঘটনায় তারা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলেও জানান তিনি।

এ বিষয়ে তালতলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুহা. তৌফিকুজ্জামান তনু বলেন, ছাত্রলীগ নেতার হাতে আওয়ামী লীগ নেতা লাঞ্ছিত হবেন, তা কিছুতেই মেনে নেয়ার নয়। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক ও নিন্দনীয়। এ ঘটনায় আহতরা আইনের আশ্রয় নেবেন বলেও জানান তিনি।

এ বিষয়ে তালতলী উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নয়ন ব্যাপারী সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে, এ বিষয়ে তিনি পরে কথা বলবেন বলে ফোন কেটে দেন।

এ বিষয়ে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জুবায়ের আদনান অনিক বলেন, ঘটনাটি তিনি অবগত আছেন, এ ঘটনায় তদন্তে যদি নয়ন ব্যাপারীর অভিযোগ প্রমাণিত হয়। তাহলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিকভাবে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নয়ন ব্যাপারীর বিরুদ্ধে রাখাইন সম্প্রদায়ের বৌদ্ধ মূর্তি চুরি ও হত্য মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে। বৌদ্ধমূর্তি চুরির ঘটনা নয়ন ব্যাপারীকে অভিযুক্ত করে পুলিশ আদালতে অভিযোগপত্রও দাখিল করেছে।

এ বিষয়ে তালতলী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কমলেশ চন্দ্র হালদার জানান, বিষয়টি তিনি অবগত নয়। তবে ঘটনাটি যদি মামলা নেয়ার মতো ঘটনা হয়, তবে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবন্থা গ্রহণ করা হবে।

 

এমএসএল