'ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ বুদ্ধিজীবী শিক্ষক স্মরণে' ডাকসুর বই


Dhaka | Published: 2020-02-24 02:14:03 BdST | Updated: 2024-05-19 01:30:59 BdST

প্রাচ্যের অক্সফোর্ড ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ১৯২১ সালে প্রতিষ্ঠালগ্নে ভারতবর্ষের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের পণ্ডিতদের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ করা হয়। ক্রমেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উপমহাদেশে শিক্ষাবিস্তারের তীর্থস্থানে পরিণত হয়। রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে প্রতিষ্ঠিত এই বিশ্ববিদ্যালয়কে কেন্দ্র করে পূর্ব বাংলার রাজনীতি আবর্তিত হতে থাকে। ক্রমেই এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষকরা বিপ্লবের পথে পুরো জাতিকে ধাবিত করেন। দীর্ঘ প্রায় দুই যুগের পাকিস্তানের শোষণ এবং নিপীড়নের স্টিম রোলারের বিরুদ্ধে তৎকালীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল ও মুক্তচিন্তা সম্পন্ন শিক্ষকবৃন্দ প্রতিবাদমুখর হয়ে উঠেন।

বাঙালি জাতিকে মেধাশূণ্য করে দিতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর যে প্রয়াস তার অন্যতম লক্ষ্য ছিলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ। বাঙালি জাতিসত্ত্বার কর্ণধার এ বুদ্ধিজীবী সম্প্রদায়ই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সকল রাজনৈতিক কর্মধারাকে এগিয়ে নিয়ে যান, কখনো লেখনীর মাধ্যমে, কখনো সাংস্কৃতিক চর্চা অথবা প্রশাসনিক সহযোগিতার মাধ্যমে। গান, কবিতা, লেখনি, চিকিৎসা, আর্থিক সহায়তা থেকে শুরু করে মুক্তিযোদ্ধাদের সকল ধরনের সহযোগিতা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ। তাই তাদের ব্যর্থ করার প্রয়াসে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী তাই অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে স্বাধীনতার উষালগ্নে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের হত্যার পৈশাচিক লীলায় উন্মত্ত হয়ে উঠে। ২৫ মার্চ মধ্যরাত এবং ১৪ ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০ জন শিক্ষককে তুলে নিয়ে গিয়ে হত্যা করে পাকিস্তানি সামরিক জান্তা।

স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের লাল সবুজ পতাকা তাই বারবার এই বুদ্ধিজীবী সম্প্রদায়ের আত্মত্যাগ ও রক্তদানের কথাই আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়। তাদের অমর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থাপনা ও গবেষণাকেন্দ্রের নামকরণ তাদের নামে করা হয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ শিক্ষকদের স্মরণ করতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ বুদ্ধিজীবী শিক্ষক স্মরণে” বইটি প্রকাশ করছে।

আমরা বিশ্বাস করি আমাদের দুর্বার অগ্রযাত্রার পথিকৃৎ সকল শহীদ বুদ্ধিজীবী শিক্ষকের স্মৃতি আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ হতে বিচ্যুত হতে দেয় না। বইয়ের গ্রন্থ সহায়িকায় উল্লেখিত সকল বই ও প্রতিবেদনের লেখক ও সম্পাদকদের কাছে আমরা ঋণী। কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি বইয়ের সহযোগী সম্পাদক ডাকসুর সদস্য নজরুল ইসলাম ও সদস্য রফিকুল ইসলাম সবুজের প্রতি যাদের অক্লান্ত পরিশ্রম এবং সহায়তায় বইটি সম্পাদনা সম্ভব হয়েছে। কৃতজ্ঞতা বইটির প্রকাশনা কাজে সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি। অনাকাঙ্ক্ষিত সকল ভুলত্রুটির জন্য আমরা ক্ষমাপ্রার্থী। পরবর্তী সংস্করনগুলো আরো নির্ভুল করার প্রয়াস আমরা অব্যাহত রাখবো। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু। বাংলাদেশ চিরজীবী হোক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চিরজীবী হোক।

লেখক: সাদ বিন কাদের চৌধুরী , মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক-ডাকসু