বঙ্গবন্ধুর ভ্রমণ গল্প 'আমার দেখা নয়াচীন'


Dhaka | Published: 2020-02-03 17:56:09 BdST | Updated: 2024-05-19 05:53:03 BdST

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রচিত তৃতীয় গ্রন্থ “আমার দেখা নয়াচীন”-এর আনুষ্ঠানিক মোড়ক উন্মোচন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ এবং ‘কারাগারের রোজনামচা’ এর পরে এটি বঙ্গবন্ধু রচিত তৃতীয় গ্রন্থ।

রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে প্রধান অতিথি হিসেবে বাংলা একাডেমির মূলমঞ্চে অমর একুশে গ্রন্থমেলার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী ও বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। এ সময় বইটির আনুষ্ঠানিক মোড়ক উন্মোচন করেন তিনি।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা বলেন, এবারের একুশে গ্রন্থমেলার অন্যতম আকর্ষণ বঙ্গবন্ধুর নতুন গ্রন্থ আমার দেখা নয়াচীন-এর প্রকাশনা। আমি বঙ্গবন্ধুর এ গ্রন্থের প্রকাশক বাংলা একাডেমি এবং এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

এ সময় বইটি নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা আশা করি অসমাপ্ত আত্মজীবনী এবং কারাগারের রোজনামচা-এর মতো এই গ্রন্থটিও দেশি-বিদেশি পাঠকের কাছে সমাদৃত হবে। বঙ্গবন্ধু যে কেবল রাজনীতিক ও রাষ্ট্রনায়কই ছিলেন না, একই সঙ্গে ছিলেন একজন অসামান্য লেখক এই বইগুলোর তার প্রামাণ্য দলিল হয়ে রইল।

তিনি বলেন, আমরা বাংলা ভাষার সাহিত্য-সংস্কৃতি চর্চাকে যেমন প্রণোদনা দিয়ে আসছি তেমনি অনুবাদ সাহিত্যের উপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করছি। বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী বইটি এখন পর্যন্ত বিশ্বের ১৩টি ভাষায় অনূদিত হয়েছে যা প্রতিটি বাংলাভাষী মানুষের জন্যই আনন্দের বিষয়।

এর আগে বিকেল ৩টায় মাসব্যাপী অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০২০-এর শুভ উদ্বোধন ঘোষণা এবং উদ্বোধনী স্মারকে স্বাক্ষর করেন প্রধানমন্ত্রী। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষে বাংলা একাডেমি আয়োজিত মাসব্যাপী অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০২০ বঙ্গবন্ধুকে উৎসর্গ করা হয়েছে।

শিল্পী সাজেদ আকবরের নেতৃত্বে সাংস্কৃতিক সংগঠন বাংলাদেশ রবীন্দ্রসংগীত শিল্পীসংস্থা-এর শিল্পীদের সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় মূল অনুষ্ঠান। এরপর পবিত্র ধর্মগ্রন্থসমূহ থেকে পাঠ করা হয়। মহান ভাষা আন্দোলনের শহিদ স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয় এবং ঐতিহাসিক ভাষার গান আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি পরিবেশন করা হয়।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী। শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোঃ আবু হেনা মোস্তফা কামাল। প্রকাশক প্রতিনিধি হিসেবে বক্তব্য প্রদান করেন বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সভাপতি মো. আরিফ হোসেন ছোটন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য প্রদান করেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান।

.

স্বাগত ভাষণে হাবীবুল্লাহ সিরাজী বলেন, বাংলা একাডেমি বঙ্গবন্ধু রচিত এবং বাংলা একাডেমি প্রকাশিত আমার দেখা নয়াচীন-এর গ্রন্থের মধ্য দিয়ে বছরব্যাপী বঙ্গবন্ধু বিষয়ক ১০০টি নতুন গ্রন্থ প্রকাশের কার্যক্রম শুরু করল। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ উদ্যাপনের অংশ হিসেবে বাংলা একাডেমি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সকল গ্রন্থ এবং রচনার সমন্বয়ে শেখ মুজিবুর রহমান রচনাবলি প্রকাশের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এই রচনাবলি সম্পাদনা করবেন বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনা।

সভাপতির ভাষণে জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, বাংলা একাডেমির অমর একুশে গ্রন্থমেলায় জনমানুষের বিপুল আগ্রহ প্রমাণ করে মুদ্রিত বইয়ের ভবিষ্যৎ মোটেও অনিশ্চিত নয়। বঙ্গবন্ধুকে উৎসর্গিত এবারের মেলা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।

গ্রন্থমেলার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ২০১৯ প্রদান করা হয়। বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার- ২০১৯ পুরস্কারপ্রাপ্তরা হলেন কবিতা- মাকিদ হায়দার, কথাসাহিত্য-ওয়াসি আহমেদ, প্রবন্ধ/গবেষণা-স্বরোচিষ সরকার, অনুবাদ-খায়রুল আলম সবুজ, নাটক-রতন সিদ্দিকী, শিশুসাহিত্য-রহীম শাহ, মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক গবেষণা-রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম, বিজ্ঞান/কল্পবিজ্ঞান-নাদিরা মজুমদার, আত্মজীবনী/স্মৃতিকথা/ভ্রমণকাহিনী-ফারুক মঈনউদ্দীন, ফোকলোর-সাইমন জাকারিয়া।

অনুষ্ঠানে পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখকদের হাতে তিন লক্ষ টাকার চেক, ক্রেস্ট ও সম্মাননাপত্র তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধন শেষে প্রধানমন্ত্রী গ্রন্থমেলা পরিদর্শন করেন।

অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন রামেন্দু মজুমদার, নূরুন্নাহার খানম এবং ড. শাহাদাৎ হোসেন নিপু।

লেখক বলছি অনুষ্ঠানে মেলার প্রথম দিন অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিধান রিবেরু, রেজা ঘটক, সৌম্য সালেক, সাইফুল ভুঁইয়া।