জলের টানে হাওরে পর্যটকের ভিড়


টাইমস ডেস্ক | Published: 2018-08-25 23:33:28 BdST | Updated: 2024-05-18 23:02:38 BdST

পাহাড়ঘেরা সবুজ বনায়ন, সোমেশ্বরী নদীর স্বচ্ছ জলরাশি আর আদিবাসীদের জীবনযাত্রার জন্য পর্যটন এলাকা হিসেবে পরিচিত নেত্রকোনার দুর্গাপুর-কলমাকান্দা এলাকা। কিন্তু এবার ঈদ উপলক্ষে বর্ষার স্বচ্ছ জলরাশি দেখতে পর্যটকরা ভিড় করছে জেলার হাওরাঞ্চলগুলোতে।

শেষ বিকেলে পানির ঢেউ, তার উপর সূর্যের আলো মন ভোলাবে যেকারো। নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকলেও প্রয়োজনীয় অবকাঠামোসহ থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা না থাকায় পিছিয়ে পড়ছে পর্যটন সম্ভাবনাময় এই এলাকা।

নেত্রকোনা জেলার মদন-মোহনগঞ্জ-খালিয়াজুরীর বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে হাওরাঞ্চল। তবে মদন উপজেলার উচিতপুর এলাকায় বালই ব্রিজ; যার দুই প্রান্তে রয়েছে প্রায় দু-কিলোমিটার ডুবন্ত সড়কপথ। এখানে ভোরের সূর্য উদয় এবং শেষ বিকেলের সূর্যের আলো মন ভোলাবে যেকারো।

বাতাসে ছোট ছোট ঢেউয়ে নৌকা দুলানো উপভোগ করতে প্রতিদিনই অসংখ্য দর্শনার্থী ভিড় করছে এখানে। বিশেষ করে ঈদসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সব শ্রেণি-পেশার দর্শনার্থীর সংখ্যা বেড়ে যায় কয়েকগুণ। নৌকা ও ট্রলার নিয়ে ঘুরে বেড়ায় এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে।

জেলার মদন, মোহনগঞ্জ ও খালিয়াজুরী- এই তিন উপজেলার গ্রামগুলো বর্ষাকালে নৌকা ছাড়া বিচ্ছিন্ন থাকে। এই হাওরাঞ্চলে নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকলেও নেই থাকা খাওয়ার তেমন সুবিধা। তাই অনেকটা কষ্ট করতে হচ্ছে ঘুরতে আসা পর্যটকদের।

স্ত্রী, ছেলেমেয়ে নিয়ে বেড়াতে আসা স্কুলশিক্ষক জাহিদুল ইসলাম জানান, এখানে এত এত লোকজন আসে অথচ এখানে নেই কোনো রেস্টরুম, নেই খাবার পানি, নেই বসার জায়গা আর খাবারের কোনো হোটেল। সারাদিন ঘুরে ফিরে শেষে আনন্দটাই মাটি হওয়ার উপক্রম হয়।’

ময়মনসিংহ থেকে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বেড়াতে আসা চাকরিজীবী আবুল হাসেম বলেন, ‘আমরা স্বল্প আয়ের চাকরি করে কক্সবাজার যাওয়ার সামর্থ নেই। ঈদের ছুটিতে এখানে এসে ভালোই কাটালাম। মনে হলো মিনি সমুদ্র সৈকত।’

মদনের উচিতপুর এলাকার বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা এই হাওর এলাকার মানুষ হিসেবে আনন্দিত। প্রতিদিন ঢাকা, ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জ ও নেত্রকোনা জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে সব বয়সের লোকজন বিনোদনের জন্য এখানে আসে। সারাদিন তারা নৌকায় চড়ে বেড়ায়, হেঁটে বেড়ায় ডুবন্ত রাস্তায়, শিশুসহ অনেকে গোসল করতে হাওরের পানিতে নামে। মাঝেমধ্যে প্রচণ্ড বাতাসে বড় বড় ঢেউয়ের সৃষ্টি হয়। এতে আতংকিত হয় পর্যটকরা, আতংকিত হই আমরাও। কারণ এখানে নেই আশ্রয়ের ব্যবস্থা।’

নেত্রকোনা জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান প্রশান্ত কুমার রায় বলেন, হাওরাঞ্চলকে পর্যটন এলাকা হিসেবে গড়ে তুলতে প্রয়োজনীয় কাজ করছেন তাঁরা। মদনের গবিন্দশ্রী এলাকায় দৃষ্টিনন্দন বালই সেতু এবং দুদিকে ডুবো রাস্তা নির্মিত হওয়ায় বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিদিনই হাজার হাজার পর্যটক এখানে ভিড় করছে। এ বছরই প্রয়োজনীয় যাত্রী ছাউনি ও পানীয় জলের ব্যবস্থা করাসহ আগামীতে স্থায়ী অবকাঠামো নির্মাণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। পরের বছর থেকে আর এ অসুবিধাগুলো থাকবে না বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। সূত্র: এনটিভি।

এসএম/ ২৫ আগস্ট ২০১৮