জুবায়ের হত্যা মামলায় পাঁচজনের মৃত্যুদন্ড, দুইজনের যাবজ্জীবন


জোবায়ের কামাল | Published: 2018-01-25 03:55:09 BdST | Updated: 2024-05-20 03:54:12 BdST

২০১২ সালের ৮ জানুয়ারি ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীন কোন্দলে প্রতিপক্ষের হামলায় নিহত হওয়া জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের স্নাতক শেষ বর্ষের ছাত্র জুবায়ের আহমেদ হত্যা মামলার রায় দিয়েছে হাইকোর্ট। এতে পাঁচ আসামির মৃত্যুদন্ড এবং দুইজনের যাবজ্জীবন সাজা বহাল রেখেছে হাইকোর্ট। বিচারিক আদালত যাবজ্জীবন সাজার রায় পাওয়া ছয় আসামির মধ্যে বাকি চারজন আপিল করে খালাস পেয়েছে।

বুধবার (২৪ জানুয়ারি) ডেথ রেফারেন্স ও আপিল শুনানির পর বিচারপতি ভাবানী প্রসাদ সিংহ ও বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রায় দেন।

মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত পাঁজন হলেন- প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগের আশিকুল ইসলাম আশিক, খান মোহাম্মদ রইছ, জাহিদ হাসান, দর্শন বিভাগের রাশেদুল ইসলাম রাজু এবং সরকার ও রাজনীতি বিভাগের মাহবুব আকরাম। এদের মধ্যে রাশেদুল ইসলাম রাজু ছাড়া বাকি চারজন পলাতক আছেন। যাবজ্জীবন কারাদন্ডের আদেশ পাওয়া ছয়জনের মধ্যে মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের নাজমুস সাকিব তপু ও দর্শন বিভাগের ইশতিয়াক মেহবুব অরূপ। এর মধ্যে অরূপ পলাতক আছেন।

এদিকে পরিসংখ্যান বিভাগের ছাত্র শফিউল আলম সেতু ও অভিনন্দন কুন্ডু অভি, দর্শন বিভাগের কামরুজ্জামান সোহাগ এবং ইতিহাস বিভাগের মাজহারুল ইসলাম যাবজ্জীবনের অভিযোগ থেকে খালাস পেয়েছেন। বর্তমানে তারা কারাগারে আছেন। এই হত্যা মামলায় আসামিদের সবাই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের নেতাকর্মী ছিলেন।

রায়ের পর জুবায়েরের বড় ভাই আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, আসলে এই রায়ের আমরা আশা করছিলাম নিম্ন আদালতের পূর্ণাঙ্গ রায়টি বহাল থাকবে। কিন্তু আমরা দেখলাম ফাঁসির দন্ডাদেশপ্রাপ্ত পাঁচজন ছাড়া যাবজ্জীবনের কারাদন্ডপ্রাপ্ত ছয়জনের মধ্যে চারজনকেই খালাস দিয়েছে। এমন অপ্রত্যাশিত রায়ে আমরা ভীষণ উদ্বিগ্ন। তিনি আরও বলেন, পূর্ণাঙ্গ জাজমেন্টের পরে চারজন খালাসপ্রাপ্ত আসামির রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আমরা আবারো আপিল করবো।

এদিকে জুবায়ের হত্যার রায়ে সন্তুষ্টি জ্ঞাপন করেছেন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদ। সভাপতি ইমরান নাদিম ও সম্পাদক নজির আমিন চৌধূরী জয় স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রায় পাওয়াটা সন্তোষজনক। এটা আমাদের আন্দোলনের বিজয়। এখন রায় দ্রুত কার্যকর করে দোষীদের সাজা দ্রুত বাস্তবায়ন করা হোক।

প্রসঙ্গত, ছাত্রলীগ কর্মী জুবায়েরকে ২০১২ সালের ৮ জানুয়ারি কুপিয়ে জখম করে তারই সংগঠনের একটি পক্ষ। পরে তাকে উদ্ধার করে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে ওইদিন রাতেই তাকে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানেই ৯ জানুয়ারি ভোরে মারা যান জুবায়ের।

জুবায়ের হত্যা মামলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ আশুলিয়া থানায় মামলা করেন। তাতে ২০১২ সালের ৮ এপ্রিল ছাত্রলীগের ১৩জন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে ঢাকার হাকিম আদালতে অভিযোগপত্র দেন তদন্ত কর্মকর্তা মীর শাহীন শাহ পরভেজ। ২০১৫ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালের বিচারক এবিএম নিজামুল হক এ মামলার রায়ে পাঁচ আসামিকে মৃত্যুদন্ড ও ছয়জনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেন। অভিযোগে দুজনের সংশ্লিষ্টতা না থাকায় খালাস দেওয়া হয়।

আরএম/ ২৪ জানুয়ারি ২০১৮