ইডেনের ছাত্রীকে অ্যাসিড নিক্ষেপকারীর যাবজ্জীবন


টাইমস প্রতিবেদক | Published: 2018-04-27 00:53:19 BdST | Updated: 2024-05-20 14:30:37 BdST

ইডেন কলেজ ছাত্রী শারমিন আখতার আঁখির উপর অ্যাসিড নিক্ষেপকারী মনির উদ্দিনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। ঘটনার সময় আঁখি ইডেন কলেজে বাংলা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্রী ছিলেন।

বৃহস্পতিবার (২৬ এপ্রিল) ঢাকার প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ও দুই নম্বর অ্যাসিড অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক প্রদীপ কুমার রায় আসামির উপস্থিতিতে এ রায় দেন।

রায়ে আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ছাড়াও অতিরিক্ত এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানার টাকা আদায় করে ভিকটিম আঁখিকে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এছাড়া আসামির স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি ক্রোক করার পর বিক্রি করে জরিমানার টাকা ভিকটিমকে দিতে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে মামলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

একই ঘটনায় দণ্ডবিধি আইনের অপর একটি মামলায় আসামিকে দুই বছর কারাদণ্ড, ১০ হাজার টাকা জরিমানা ও জরিমানা অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

রায় ঘোষণার পর আসামি মনির তার প্রতিক্রিয়ায় জানান, এ রায়ে তিনি সন্তুষ্ট নন। তিনি উচ্চ আদালতে আপিল করবেন।

২০১৩ সালের ২৪ জানুয়ারি সকালে ডিবির একটি দল খাগড়াছড়ির কুরকুটিছড়ি গ্রামের আমলকি বিক্রেতা রংগু চৌধুরীর বাড়ি থেকে মনিরকে গ্রেফতার করে।

ডিবি পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মনির জানিয়েছিলেন, দুই-তিন বছর আগে মনিরের সঙ্গে আঁখির বিয়ে হয়েছিল। ছয়-সাত মাস আগে তাদের ছাড়াছড়ি হয়ে যায়। ঘটনার দিন মিথ্যা কথা বলে মনির ছাত্রীকে রাজধানীর চাঁনখারপুল কাজী অফিসে নিয়ে জোর করে ফের বিয়ে করতে চান। এতে ছাত্রীটি রাজি না হওয়ায় তার গায়ে অ্যাসিড নিক্ষেপ ও ছুরিকাঘাত করেন।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২০১৩ সালের ১৬ জানুয়ারি ওই ছাত্রী তার গায়ে অ্যাসিড নিক্ষেপের ব্যাপারে তৎকালীন ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ইসমাইল হোসেনের কাছে জবানবন্দি দেন।

ওই বছরের ২০ জানুয়ারি যে কাজী অফিসে ওই ছাত্রী অ্যাসিড সন্ত্রাসের শিকার হন সেই কাজী হাবিবুল্লাহ খানও সাক্ষী হিসেবে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।

জবানবন্দিতে তিনি বলেন, ইডেন কলেজের বাংলা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্রী শারমিন আখতার আঁখিকে তার সামনেই অ্যাসিড দিয়ে ঝলসে দেওয়া হয়।

এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর ছোট ভাই মহিউদ্দিন আহমেদ বাদী হয়ে বংশাল থানায় এ মামলা দায়ের করেন।

রায়ের বিবরণ থেকে জানা যায়, ২০১৩ সালের ১৫ জানুয়ারি আঁখি বাসা থেকে কলেজের উদ্দেশ্যে বের হলে আসামি তাকে চাঁনখারপুল এলাকা থেকে জোর করে কাজী অফিসে নিয়ে গিয়ে বিয়ের প্রস্তাব দেন।

ভিকটিম আঁখি বিয়েতে রাজি না হওয়ায় আসামি তার সঙ্গে আনা অ্যাসিডের বোতল থেকে ভিকটিমের মাথায় অ্যাডিস ঢেলে দেন এবং ছুরিকাঘাত করেন।

এতে ভিকটিমের মাথা, মুখ ও শরীরে ডান দিকের অংশ পুড়ে যায়। ডান হাত ও পিঠ ছুরির আঘাতে কেটে যায়।

২০১৩ সালের ১৪ মার্চ ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ফজলুর রহমান মনির ও মাসুমকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। রায় ঘোষণার আগে চার্জশিটের ৩২ সাক্ষীর মধ্যে ২১ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন আদালত।

টিআই/ ২৬ এপ্রিল ২০১৮