ইন্টারনেটে সময় ব্যয়, কমানোর কী উপায়?


Tenminuteschool | Published: 2017-12-27 03:15:45 BdST | Updated: 2024-05-20 22:17:17 BdST

প্রযুক্তির এই যুগে নানান ধরনের গেজেট বা ইলেকট্রনিক ডিভাইস আমাদের নিত্যসঙ্গী। প্রতিনিয়তই আমরা কোন না কোন ডিভাইস বা যন্ত্র ব্যবহার করছি। যন্ত্রের যাঁতাকলে জীবনটাই যান্ত্রিক হয়ে যাচ্ছে। এর সাথে যোগ হয়েছে ইন্টারনেটের সহজলভ্যতা ও অতিরিক্ত ব্যবহার। দিনের উল্লেখযোগ্য একটা সময় আমরা এখন অনলাইনে ব্যয় করি।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং তথ্য-প্রযুক্তির গ্যাঁড়াকলে হারিয়ে যাচ্ছে অফুরন্ত সময়। নষ্ট হচ্ছে সামাজিক ও পারিবারিক সম্পর্কের ভিত। শুধু তাই নয়, ইন্টারনেট-আসক্তি কমিয়ে দিচ্ছে কর্মস্পৃহা এবং সৃষ্টিশীলতা। আর এসব কারণে জীবনের প্রকৃত অর্থই যেন আজ বিলীন হতে বসেছে। আমরা সবাই কম বেশী অনুভব করি এ থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে। কিন্তু কীভাবে?

চলুন,পরিবারের সবাই মিলে কিংবা বন্ধুরা ইন্টারনেট-আসক্তি থেকে বিরত থাকার কিছু উপায় জেনে নেয়া যাক:

১। বদলে ফেলুন ঘরের পরিবেশ:
ইন্টারনেট থেকে দূরে থাকার পূর্বশর্ত হচ্ছে ইন্টারনেট ব্যবহার করা যায় এমন ডিভাইস থেকে দূরে থাকা।

কম্পিউটার অথবা ল্যাপটপ নিজের বেডরুমে না রেখে কম্পিউটার রুম অথবা অফিসে রাখুন।
যে কোন চার্জার রুমের বাহিরে রাখুন। কারণ কোন প্রকার শব্দ অথবা ভাইব্রেশন রুমের পরিবেশ-এ বিঘ্ন ঘটাতে পারে।
ইলেকট্রনিক্ ডিভাইস এর নীল আলো অনেক সময় অনিদ্রার কারণ হতে পারে। তাই ঘুমানোর বেশ আগেই মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ অথবা টেলিভিশন ব্যবহার করতে হবে।

২। সময় কাটুক অ-ডিজিটাল কার্যালাপে:
অবসর সময়টুকু অনলাইনে না কাটিয়ে অন্য কোন কাজ করতে পারেন।

অনলাইনে বন্ধুদের সাথে আড্ডা না দিয়ে কারো বাসায় বা বাইরে অন্য কোথাও দেখা করতে পারেন। এতে করে বন্ধুত্বের সম্পর্ক আরও মধুর হয়ে উঠবে।
পরিবারের সবাই মিলে কিংবা বন্ধুরা একসাথে দর্শনীয় কোন স্থানে ঘুরে আসতে পারেন। ভ্রমণ আপনার মনকে আনন্দময় ও প্রফুল্ল করে তুলবে।
অবসর সময়ে বা ছুটির দিনগুলোতে বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করতে পারেন।

সম্ভব হলে সপ্তাহে অন্তত একদিন নিজেকে ভার্চুয়াল জগত থেকে দূরে রাখুন।
ইন্টারনেট ব্যবহার কমিয়ে তার বদলে বেছে নিতে পারেন শখের কোন কাজ। যেমন: ছবি আঁকা, বই পড়া, গান শেখা, দাবা খেলা ইত্যাদি।

৩। না বলুন ইন্টারনেট আসক্তিকে!
গবেষণায় বলা হয়েছে, সপ্তাহে ৩০ ঘণ্টার বেশি ইন্টারনেট ব্যবহার করলে তাকে ইন্টারনেট আসক্তি বলা হয়। ইন্টারনেট আসক্তিকে না বলার কিছু উপায় হল:

কিছু ওয়েবসাইট আছে যাতে আপনার অ্যাকাউন্ট রাখার তেমন কোন দরকারই নেই

ইন্টারনেট ব্যববহারের জন্য একটি নির্দিষ্ট সময় নির্বাচন করুন, যে সময়ে আপনি ই-মেইল পাঠানো, মেইল বা অন্য কোন নোটিফিকেশন চেক করা সহ অনলাইনের যাবতীয় কাজ করবেন।
সারাদিন অনলাইনে না থেকে নির্দিষ্ট পরিমান সময় অনলাইনে ব্যয় করুন।

কিছু পরিবারের সবাই মিলে কিংবা বন্ধুরা সফটওয়্যার সময় বেঁধে দেয়া (time lock) সমর্থন করে। আপনার বাসার অন্য কাউকে পাসওয়ার্ডটি সেট করতে বলুন যাতে করে শুধুমাত্র জরুরী (emergency) ক্ষেত্রেই আপনি এটাকে আনলক করতে পারেন, নিজের যখন ইচ্ছা তখন নয়। এতে করে ইন্টারনেট আসক্তি অনেক কমে যাবে।
কিছু সোশ্যাল মিডিয়া আছে যেগুলোতে একাউন্ট না থাকলেও কিন্তু চলে। যেমন: স্ন্যাপ চ্যাট , ইন্সট্রাগ্রাম ইত্যাদি। এ অ্যাকাউন্টগুলো কেবলমাত্র সময়ের অপচয়ই নয় বরং আসক্তিকরও বটে।তাই এগুলো থেকে সম্ভব হলে দূরে থাকাই ভালো।এ ছাড়া কিছু ইন্সট্যান্ট ম্যাসেজিং অ্যাপ রয়েছে যেগুলো অনেকটা একই ধরনের কাজ করে যেমন: হোয়াটস অ্যাপ, ভাইবার, ইমো ইত্যাদি। তাই সবগুলো অ্যাপ ব্যবহার না করে যে কোনো একটি অ্যাপ ব্যবহার করার চেষ্টা করুন।

লেখাটি টেন মিনিট স্কুল থেকে নেয়া 

ছবিটি বাইলস ডট ওআরজি থেকে নেয়া 

বিডিবিএস