সেরা ছাত্রের ৫ বৈশিষ্ট্য


টাইমস অনলাইনঃ | Published: 2018-07-23 05:49:55 BdST | Updated: 2024-05-20 23:11:21 BdST

তারা আত্মবিশ্বাসী
ভালো রেজাল্ট করাটা খুবই সহজ। করতে চাইলেই করা যায়।জন্যে জিনিয়াস হওয়ার প্রয়োজন নেই। অসাধারণ মেধাবী বা শ্রুতিধর হওয়ার দরকার নেই। গণ্ডায় গণ্ডায় প্রাইভেট টিচার বা ভালো স্কুল কিংবা ধনী বাবা-মায়ের সন্তান হওয়াও ভালো রেজাল্টের শর্ত নয়। ভালো রেজাল্টের জন্যে প্রয়োজন মাত্র দুটি জিনিস। এক - আত্মবিশ্বাস, দুই-অদম্য ইচ্ছা।
বিশ্বাস হচ্ছে না? একটা উদাহরণ দেয়া যাক।

ড. বি আর আম্বেদকর| জন্ম ১৯ শতকের শেষভাগে ব্রিটিশ ভারতের মধ্যপ্রদেশে এক দলিত পরিবারের ১৪ নম্বর সন্তান হিসেবে। অসপৃশ্য হওয়ায় স্কুলে তাকে বসতে হতো ক্লাসের বাইরে বারান্দায়। এমনকি তেষ্টা পেলে স্কুলের উচ্চ বর্ণের দপ্তরীটি ছোঁয়া বাঁচিয়ে ওপর থেকে পানি ঢেলে না দেয়া পর্যন্ত পানি খাওয়ার অনুমতিটুকুও ছিলো না তার। এন্ট্রান্স পরীক্ষা দিতে ১৯ মাইল দূরের পরীক্ষা কেন্দ্রে যাচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু মাঝপথে গারোয়ান তাকে গরুর গাড়ি থেকে নামিয়ে দিয়েছিলো অসপৃশ্য হয়ে গাড়িতে ওঠার অপরাধে।
এতকিছুর পরও হার মানেন নি। দারিদ্র্য আর রোগ-শোকের বিরুদ্ধে লড়াই করে বেঁচে যাওয়া মাত্র ৫ ভাই-বোনের ১ জন ছিলেন তিনি এবং একমাত্র তিনিই পেরোন হাইস্কুলের গণ্ডী। ভারতের ইতিহাসে তিনিই প্রথম দলিত সমপ্রদায়ের সদস্য যিনি কলেজে ভর্তি হন। পরবর্তীতে কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটি ও লন্ডন স্কুল অব ইকনমিক্স থেকে আইন ও অর্থনীতিতে উচ্চতর ডিগ্রিসহ অর্জন করেন কয়েকটি ডক্টরেট।
দেশে ফিরে একজন প্রতিষ্ঠিত আইনজীবীর পাশাপাশি তিনি হয়ে ওঠেন সমকালীন রাজনীতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। দলিত সমপ্রদায়ের অধিকার রক্ষার আন্দোলনে জীবনকে উৎসর্গ করেন। স্বাধীন ভারতের সংবিধান প্রণয়নের গুরুদায়িত্ব পালন করেন উদার মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে যা অর্জন করে সবার সপ্রশংস সমর্থন।
বাবা আম্বেদকর নামে ভারতবর্ষে তিনি হয়ে ওঠেন সর্বজনশ্রদ্ধেয়। প্রতিবছর তার জন্ম, মৃত্যুদিবসে হাজারো মানুষ সমবেত হয় তার স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানাবার উদ্দেশ্যে।
আপনার অবস্থা নিশ্চয়ই বাবা আম্বেদকরের চেয়ে খারাপ নয়। তাহলে আপনি কেন পারবেন না? আপনি যে পারবেন- সে প্রমাণ দিয়েই আপনি পৃথিবীতে এসেছেন। মাতৃগর্ভে একটি ডিম্বানুর সাথে মিলিত হওয়ার জন্যে পিতার দেহ থেকে যে ৩০ থেকে ৫০ কোটি শুক্রাণু যাত্রা শুরু করেছিলো, আপনি হচ্ছেন সেই শুক্রাণুর বিকশিত রূপ, যে ডিম্বানুর সাথে মিলিত হতে পেরেছিলো। ৩০/৫০ কোটির সাথে প্রতিযোগিতায় জয়ী হয়েছিলেন বলেই আপনি পৃথিবীতে আসতে পেরেছিলেন।
নিজের মনোদৈহিক প্রক্রিয়াকে একটু বুঝতে চেষ্টা করলেই এই আস্থা ও আত্মবিশ্বাস অনেকগুণ বেড়ে যাবে। নিজের দেহের কথাই ভাবুন। ৫ শতাধিক মাংসপেশী, ২ শতাধিক হাড়, ৭০ থেকে ১০০ ট্রিলিয়ন দেহকোষ বা সেলের স্বমন্বয়ে গঠিত এই শরীরের প্রতিটি সেলে খাবার পৌঁছানোর জন্যে রয়েছে শিরা ও ধমনীর ৬০ হাজার মাইল দীর্ঘ পাইপ লাইন। আর আপনার হার্ট কোনোরকম ক্লান্তি বা প্রতিবাদ ছাড়াই প্রতিদিন এক লক্ষ বার স্পন্দনের মাধ্যমে ১৬ শত গ্যালনেরও বেশি রক্ত পাম্প করে দেহকে সচল রাখছে।

আপনি যদি নিজেকে মূল্যহীন মনে করে থাকেন, ভাবেন আহা অমুকের মতো যদি হতে পারতাম! তাহলে এর চেয়ে বড় ভ্রান্তি কিছুই হতে পারে না। কারণ আপনার মনোদৈহিক কার্যক্রম পরিচালনাকারী ব্রেন হচ্ছে যেকোনো কম্পিউটারের চেয়েও কমপক্ষে দশ লক্ষ গুণ বেশি শক্তিশালী। কম্পিউটারের দামের অনুপাতে আপনার ব্রেনের মূল্য কমপক্ষে ৫ হাজার কোটি টাকা। আর আপনি জানেন যে, সভ্যতার সবকিছুর পেছনেই রয়েছে এই ব্রেনের ক্ষমতার সৃজনশীল প্রয়োগ। আর আপনি বিশ্বের ৬ শত কোটি মানুষের মধ্যে এক অনন্য সৃষ্টি। আপনার মতো হুবহু একইরকম দ্বিতীয় কাউকে খুঁজে পাওয়া যাবে না। আপনার ব্রেনও তাই অনন্য। তাই ক্লাসে ১ম হওয়া থেকে শুরু করে জীবনের প্রতিটি যুক্তিসঙ্গত চাওয়াকে আপনি পাওয়ায় রূপন্তরিত করতে পারবেন যদি আপনি বিশ্বাস করেন।

তারা জানে তাদের জীবনের লক্ষ্য

১৯০৩ সালের ডিসেম্বর বেলা ১০ টা। পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বাতাসের চেয়ে ভারী শক্তিচালিত এক যান নিয়ে মানুষ সফলভাবে আকাশে উড়লো হাজার বছর ধরে যা ছিলো শুধু এক অসম্ভব কল্পনা। আর তা করলেন দুভাই- উইলবার রাইট এবং অরভিল রাইট। মজার ব্যাপার হলো, তারা কেউ কিন্তু কোনো বিজ্ঞানী ছিলেন না। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অংক, পদার্থবিজ্ঞান বা এরোনটিকেল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে তাদের কোনো উচ্চতর ডিগ্রি ছিলো না, এমনকি হাই স্কুলের গণ্ডীও তারা পেরোননি। ডেটনের দুজন বাইসাইকেল মিস্ত্রী কি করে এই অসম্ভবকে সম্ভব করলেন? এককথায় তার উত্তর মনছবি।

ছোটবেলায় বাবার এনে দেয়া একটি উড়ন্ত খেলনা থেকেই দুভাইয়ের মাথায় প্রথম উড়ে যাওয়ার চিন্তা জাগে। তারপর বছরের পর বছর ধরে গবেষণা, চেষ্টা, ব্যর্থতার পর তারা লাভ করেন এ সাফল্য। এরপর আপনি যখন কোনো বিমানে চড়বেন বা মাথার ওপর দিয়ে বিমান উড়ে যেতে দেখবেন, আপনি অনুভব করার চেষ্টা করবেন কত সাধারণ একটি ভাবনা থেকেই না এ বাস্তবতার শুরু হয়েছিলো। কারণ মন যা ভাবতে পারে, যা বিশ্বাস করতে পারে; মন পারে তা অর্জন করতেও। এখানেই মনছবির শক্তি।

আপনি কি ঠিক করেছেন আপনি কী হবেন? আগামী পরীক্ষায় আপনি কত নাম্বর পেতে চান? এইচএসসি’র পর ভর্তি হবেন কোথায় তা কি ভেবেছেন?

আপনার মনছবি হতে হবে সুনির্দিষ্ট ও সুস্পষ্ট। আগামী পরীক্ষায় আমি ভালো করবো, এটা মনছবি নয়। মনছবি হলো আগামী পরীক্ষায় প্রতিটি সাবজেক্টে আমি ৯০+ পেয়ে জিপিএ ‘এ’ পাবো। লক্ষ্য হতে হবে বাস্তবসম্মত, তবে অবশ্যই বড়। ঢিলটা যদি চাঁদকে লক্ষ্য করে ছোড়েন তবে কমপক্ষে তাতো গাছের মগডালে গিয়ে লাগবে। যতটা সম্ভব খুঁটি-নাটিসহ মনছবিকে দেখুন। যত বিস্তারিত দেখবেন আপনার অনুভূতি তত জীবন্ত হবে। আর এ অনুভূতিই স্বতঃস্ফূর্তভাবে আপনাকে নিয়ে যাবে মনছবির বাস্তবায়নের দিকে।

তাদের সময়ের ওপর তাদের নিয়ন্ত্রণ আছে

ছাত্র-ছাত্রীদের সময় মোটামুটি ৪ ধরনের কাজ করে কাটে:

১. জরুরি (দরজা খোলা, ফোন ধরা বা কোনো অনিবার্য বাধাবিঘ্ন)

২. গুরুত্বপূর্ণ (ক্লাসের আগে পড়া, নোট তৈরি করা, পরীক্ষার পূর্বপ্রস্তুতি, নিয়মিত ব্যায়াম)

৩. জরুরি এবং গুরুত্বপূর্ণ (পরীক্ষার পড়া, বাড়ির কাজ, প্র্যাকটিক্যাল বা কোনো অ্যাসাইনমেন্টের কাজ)

৪. জরুরি না, গুরুত্বপূর্ণও না (যেমন, টিভি দেখা, কম্পিউটার গেম খেলা, মোবাইলে কথা বলা, আড্ডা দেয়া, বেড়ানো বা অসময়ে অতিরিক্ত ঘুম)

একজন সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীর বেশিরভাগ সময় কাটে ৩ এবং ৪ নম্বর কাজে। কিন্তু একজন অনন্য ছাত্র হিসেবে আপনাকে সবচেয়ে বেশি সময় দিতে হবে ২ এবং ৩ নম্বর কাজে। ১ নম্বর কাজগুলো যাতে খুব বেশি সময় নিয়ে না নেয় সে ব্যাপারে সচেতন হতে হবে এবং ৪ নম্বর কাজগুলো থেকে বিরত থাকার চেষ্টা করতে হবে।

বড় কিছুর জন্যে তারা ছোটছোট আনন্দকে বিসর্জন দিতে পারে
অধিকাংশ মানুষের কাছে সফল হতে চাওয়াটা শুধু চাওয়াতেই সীমাবদ্ধ। তাঁরা চান মাঝেমাঝে পড়ালেখা করবো, টিভি-সিনেমা দেখবো, আড্ডা দেবো, গান শুনবো, গল্পের বই পড়বো। তারপর যদি এ প্লাস না পাই তাহলে কি আর করা। জীবনটাকে তো উপভোগ করতে হবে! কিন্তু একজন ফার্স্টবয় কি এভাবে ভাবে? ভাবে না। তার কাছে ফার্স্ট হওয়াটাই গুরুত্বপূর্ণ। এর জন্যে যা করা দরকার, যেভাবে করা দরকার এবং যা বর্জন করা দরকার সে তা-ই করে।
নিজেকে জিজ্ঞেস করুন, যে সাফল্যের মনছবি আমি দেখছি সে সাফল্যকে বরণের প্রস্তুতি কি আমি নিচ্ছি? আর এ প্রস্তুতির অংশ হিসেবে সচেতন হোন এ সময়খাদকগুলোর ব্যাপারে।

বন্ধুর ফাঁদ পাতা ভুবনে
ছাত্রজীবনে বন্ধুদের প্রভাব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারো কারো জীবন প্রভাবিত হয় প্রধানত বন্ধুদের দ্বারাই। যার সাথে আপনার যোগাযোগ বেশি হবে তার দ্বারাই আপনি প্রভাবিত হবেন বেশি। অধিকাংশের জীবনধারা তাদের ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের মতোই হয়। আপনার বন্ধুরা যদি মেধাবী, সহানুভূতিশীল সুস্বাস্থ্য ও সুন্দর ব্যক্তিত্বের অধিকারী হয়, তাহলে আপনারও তা অর্জন করার সম্ভাবনা থাকবে। আপনার বন্ধুরা যদি নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির বা রূঢ় আচরণে অভ্যস্ত হয়, লক্ষ্যহীন জীবনে ভেসে বেড়াতে থাকে, ড্রাগ, ধূমপান ও অন্যান্য বদ অভ্যাস বা অনাচার-অত্যাচারে লিপ্ত থাকে বা মাস্তান ও সন্ত্রাসীদের সাথে জড়িত থাকে, তাহলে এ ধরনের বন্ধুরা আপনার জীবনের সুমহান লক্ষ্য থেকে আপনাকে বিচ্যুত করতে পারে। কোনো বন্ধু যদি আপনার জন্যে আনন্দের কারণ না হয়, যদি বেশিরভাগ সময়ই তার সাথে তর্ক-বিতর্কে কেটে যায়, তাহলেও আপনার আচরণে কিছু পরিবর্তন আনা উচিত। হয় তার সাথে দেখা করার সময় কমিয়ে দিন বা কিভাবে তার সাথে মতৈক্য সৃষ্টি করা যায় তা খুঁজে বের করুন। কারণ, ক্রমাগত মতানৈক্য আপনার মানসিক প্রশান্তি বিনষ্টের কারণ হতে পারে।
আসলে সহপাঠী মানেই বন্ধু নয়। সুসম্পর্ক থাকবে সবার সাথে কিন্তু বন্ধুত্ব হবে তাদের সাথেই যাদের জীবন চেতনা ও লক্ষ্যের সাথে আপনার মিল রয়েছে। আর সবসময় সৎসঙ্ঘে থাকুন। সৎ চেতনায় সঙ্ঘবদ্ধ মানুষই জীবনে ১ম হয়।

মোবাইল
আধুনিক জীবনের একটি অপরিহার্য অনুষঙ্গ হচ্ছে মোবাইল। কিন্তু আপনি কি সবসময় শুধু প্রয়োজনের কাজেই এই মোবাইল ব্যবহার করছেন? নাকি দিনের একটা বড় সময় কেটে যাচ্ছে অপ্রয়োজনীয় মোবাইল আলাপে? মাত্রাতিরিক্ত মোবাইল আপনার মনোযোগের ক্ষমতাকে কমিয়ে দিতে পারে। শুধু প্রয়োজনের কলগুলোই করুন। কোনো মিসকলের বিপরীতে কল না করাই ভালো। কারো যদি বেশি প্রয়োজন হয় তাহলে সে-ই আপনাকে কল করবে।

টিভি না বোকার বাক্স
টিভিকে বলা হয় বোকার বাক্স। কারণ মাত্রাতিরিক্ত টিভি দেখলে বোকা হয়ে যেতে হয়, সৃষ্টি হয় বিনোদন আসক্তি। এটা এখন বিজ্ঞানীদেরও কথা। ইউনিভার্সিটি অব মেরিল্যান্ডের ড. মাইকেল মিলার এক গবেষণায় দেখেছেন টিভির উত্তেজক দৃশ্য দেখার ফলে রক্তচাপ বাড়ে এবং দেহে স্ট্রেস হরমোন তৈরি হয়। যার প্রভাব থাকে কমপক্ষে ৪৫ মিনিট ধরে। তাই স্রেফ বিনোদনের মাধ্যম নয়, টিভিকে কাজে লাগান আপনার শিক্ষামূলক অভিজ্ঞতা লাভের সুযোগ হিসেবে।

প্রতিকূলতাই তাদের এগিয়ে যাওয়ার শক্তি

কৃষকের বুড়ো গাধাটি পা ফসকে পড়ে গেল বাড়ির পাশের মজে যাওয়া কুয়োয়। পড়েই জুড়ে দিলো ত্বারস্বরে চিৎকার। দিন নেই রাত নেই সারাক্ষণ শুধু ব্যা, ব্যা। কৃষকের ঘুম হারাম হয়ে গেল। বাড়িতে লোকজন থাকতে পারছে না, ছেলেমেয়েরা পড়তে পারছে না, প্রতিবেশীরা শান্তিতে কাজ করতে পারছে না। মহাবিরক্ত হয়ে কৃষক সিদ্ধান্ত নিলো কুয়োটা বুজিয়ে ফেলবে। এতে বুড়ো গাধাটা মরবে। জায়গাটাও কাজে লাগবে। কিন্তু এত মাটি কোথায় পাবে? শেষমেশ প্রতিবেশীদের শরণাপন্ন হলো। বাড়ি বাড়ি গিয়ে বললো যার যত ময়লা-আবর্জনা আছে সব যেন ঝুড়ি ভরে নিয়ে আসে তার বাড়ির কুয়োতে ফেলার জন্যে। সবাই মহা উৎসাহে বাড়ির আনাচে কানাচে যত আবর্জনা আছে সব এনে ধামায় ভরে ফেলতে লাগলো কুয়োয়। প্রথম কিছুক্ষণ গাধা বুঝলোই না কী ঘটতে চলেছে। বিস্ময়ের ঘোর কাটতেই সে বুঝলো সবাই মিলে তাকে আবর্জনাচাপা দিতে চাইছে। সে-ও দমবার পাত্র নয়। বুদ্ধি ঠিক করে ফেললো। একেক গামলাভর্তি ময়লা পড়ে আর গাধা পিঠ ঝাঁকিয়ে ময়লাটুকু ঝেড়ে ওটার ওপরে উঠে দাঁড়ায়। এই করে করে একসময় কুয়োটি যখন ভরে গেল একলাফে গাধা বেরিয়ে এল বাইরে। যে ময়লা ছোঁড়া হয়েছিলো তাকে কবর দেবার জন্যে সে ময়লাকেই সে ব্যবহার করলো তার মুক্তির অবলম্বন হিসেবে।

আপনার প্রতিকূলতাই রূপান্তরিত হতে পারে সম্ভাবনায়, যদি আপনি মনের কাছে হেরে না যান। কারণ পরিবেশ-পরিস্থিতি নয়, মানুষ প্রথম হেরে যায় তার মনের কাছে। আর প্রতিকূলতা আপনাকে গড়ার প্রয়োজনেই। কারণ সমস্যা-বাধার মুখে না পড়লে আপনার অর্ন্তগত শক্তি জেগে ওঠার পথ পাবে না। এটাই সফল হবার প্রক্রিয়া। সফল হতে হলে তাই বাসায় পড়ার পরিবেশ নেই, হোস্টেলে সিট সমস্যা, আর্থিক টানাপোড়েন, টিউশনি করতে ভালো লাগে না, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ি, ভালো সাবজেক্টে চান্স পাইনি, টিচার ভালো না বা উৎসাহ দেয়ার কেউ নেই এ জাতীয় অজুহাত না দিয়ে প্রতিটিকেই গ্রহণ করুন চ্যালেঞ্জ হিসেবে, ভুল থেকে শেখার সুযোগ হিসেবে।

বিদিবিএস